আজকের দিনে একটা ফেসবুক একাউন্ট তো সব্বারই থাকে। আপনারও নিশ্চয়ই আছে। ফেসবুকে নিজের ব্যাক্তিগত মুহূর্তের ছবি শেয়ার করা, কি করছেন না করছেন সেসব ফেসবুক ফ্রেন্ডদের জানানো—এটা তো সবাই আজকাল করে থাকে। আপনিও নিশ্চয়ই সেই হুজুগে শামিল? কিন্তু জানেন কি ফেসবুক একাউন্ট যদি সুরক্ষিত না থাকে, তাহলে যখন তখন যে কারুর হাতে আপনার যাবতীয় সমস্ত ব্যাক্তিগত তথ্য, ছবি, আপনার পছন্দ-অপছন্দের সমস্ত হাল-হকিকত হাজির হয়ে যেতে পারে? আর আজকের নেট দুনিয়ায় ওই সমস্ত ব্যাক্তিগত তথ্য—আপনি কখন কার সাথে কি করছেন, কি কথা বলছেন, কেমন ছবি দিচ্ছেন—ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস অচেনা কারুর হাতে চলে যাওয়া মানেই কিন্তু আপনার ‘বাকিটা ব্যাক্তিগত’ বলে আর কিছুই রইলো না!
সবটাই ওপেন একটা ব্যাপার হয়ে গেলে বুঝতেই পারছেন আপনার ছবি নিয়ে হ্যাকাররা কত কিছুই করতে পারে, বা আপনার ব্যক্তিগত চ্যাট নিয়েও আপনাকে সহজেই ব্ল্যাকমেল করতে পারে! শুনে নিশ্চয়ই ঘাবড়ে গেছেন? ভাবছেন যে ফেসবুক একাউন্টটাই ডিলিট করে দেবেন কিনা? নানা, ওত ভয় পাবার কিচ্ছু নেই। একাউন্টও ডিলিট করতে হবে না। তারচেয়ে বরং আসুন ফেসবুক একাউন্ট কি করে সুরক্ষিত রাখবেন তার হদিশ জেনে নিই।
ফেসবুক একাউন্টকে সুরক্ষিত করতে হলে শক্তিশালী একটা পাসওয়ার্ড বানানো কিন্তু অত্যন্ত জরুরি। এমন একটা পাসওয়ার্ড দিন যা আপনি অন্য কোনো একাউন্টে ব্যবহার করেন না। নিজের নাম, জন্মদিন, ফোন নাম্বার এসব পাসওয়ার্ড হিসেবে একদম দেবেন না। এক্সপার্ট হ্যাকারদের কাছে এসব ইনফরমেশন বের করা কিন্তু বাঁয় হাত কা খেল! তাই ইউনিক পাসওয়ার্ড দিন যা আগে কোথাও ব্যবহার করেন নি। ১২ থেকে ১৩ টি ক্যারেক্টারের মধ্যে দেবার চেষ্টা করুন। আর পাসওয়ার্ডে যেন সংখ্যা, চিহ্ন ইত্যাদিও থাকে। ওগুলি আপনার পাসওয়ার্ডকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। আর কখনও কারুর সাথেই পাসওয়ার্ড শেয়ার করবেন না সে যতই আপনার ভালো বন্ধু হোক না কেন! মাঝে মাঝেই পাসওয়ার্ড পাল্টাতে থাকুন।
ফেসবুকের সেটিংসে গিয়ে আপনি আপনার সিকিউরিটি সেটিংস পাল্টাতে পারেন। লগ ইন অ্যালার্ট সেট করার জন্য ‘সেটিংসে’র ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড লগ ইন’ অপশনে গিয়ে লগ ইন অ্যালার্ট অন করে রাখুন। তাহলে দেখবেন আপনি ফেসবুকে লগ ইন করার সাথে সাথেই সবসময় ইমেল-এ বা মোবাইলে (যদি মোবাইল নাম্বার কানেক্ট করা থাকে) মেসেজ আসছে আপনি কোন ডিভাইস থেকে কটার সময় লগ ইন করছেন। যদি অন্য কেউ আপনার একাউন্টে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করে, তাহলেও আপনি সহজেই সাথে সাথে লগ ইন অ্যালার্ট পেয়ে যাবার ফলে সতর্ক হয়ে যেতে পারবেন।
আপনার ফেসবুক একাউন্টকে যদি আরও সুরক্ষিত করতে চান তাহলে এই ‘টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ সেট করে রাখুন। এর ফলে একাউন্টে লগ ইন করার সাথে সাথে আপনার মোবাইলে একটা কোড আসবে, সেটা ইনপুট করার পর তবেই আপনার একাউন্ট খুলবে। বুঝতেই পারছেন আপনার একাউন্ট যেহেতু মোবাইল নাম্বারে আসা কোড দিয়ে ভেরিফাই করতে হবে, তাই আপনি ছাড়া আর কেউই আপনার একাউন্ট খুলতে পারবে না।
ফেসবুক বলেই যদি আপনি ভাবেন যাকে তাকে আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে অ্যাড করে নেবেন তাহলে কিন্তু খুব ভুল করবেন। নানা সময়ে তো কাগজে বা খবরে দেখেইছেন ফেসবুকে অচেনা লোকের সাথে বন্ধুত্ব করে নানাজনকে কি হয়রানির শিকার হতে হয়েছে! আর কে বলতে পারে অচেনা যাকে আপনি ‘বন্ধু’ বানাচ্ছেন সে হয়তো কৌশলে আপনার ভালো বন্ধু হয়ে আপনার সব ব্যাক্তিগত তথ্য জেনে আপনাকে নানাভাবে হ্যারাস করা শুরু করল! তাই অচেনা লোকের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট কখনই একসেপ্ট করবেন না। যাদের আপনি ব্যাক্তিগতভাবে চেনেন, শুধু তাদেরই রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করুন।
ফেসবুকে ব্যাক্তিগত তথ্য, যেমন ছবি আপনি কাদের কাদের সাথে শেয়ার করছেন তা ঠিক করার জন্য চারটে অপশন থাকে। ‘পাবলিক’—যেখানে অচেনা যে কেউই আপনার সব তথ্য জানতে পারবে। ‘ফ্রেন্ড’—যেখানে শুধুমাত্র আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ডরাই আপনার ছবি বা ব্যাক্তিগত তথ্য জানতে পারবে। ‘কাস্টম’—আপনার ফ্রেন্ডলিস্টের মধ্যেও কারা কারা আপনার তথ্য জানতে পারবে সেটা আপনি নিজেই ঠিক করতে পারবেন। ‘অনলি মি’—এই অপশনে আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য কেবল আপনিই জানতে পারবেন। এবার আপনিই ঠিক করুন কাদের কাদের আপনি আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য, ছবি, পোস্ট ইত্যাদি দেখতে দেবেন। তাছাড়া কারা কারা আপনাকে ফেসবুকে ট্যাগ করতে পারে সেটাও আপনি নিজে ঠিক করতে পারেন।
আর ফেসবুক যখন তখন রাস্তায় ব্যবহার করবেন না। ভাবুন রাস্তায় যখন আপনি ফেসবুক করছেন, তখন আপনার মোবাইলটি চুরি হয়ে গেল—তাহলে কিন্তু আপনার ফেসবুকের যাবতীয় তথ্য তার কাছে চলে যাবে। তাই সাবধান। ফেসবুক ইউস করা হয়ে গেলে প্রত্যেকবার লগ আউট করে দিন। অজানা লিঙ্ক কখনই ক্লিক করবেন না। এর ফলে আপনার ডিভাইসে ভাইরাস ঢুকে আপনার একাউন্ট হ্যাক হয়ে যেতে পারে। আর নিজের ফ্রেন্ডলিস্টটিও কেবল যাতে নিজে দেখতে পারেন, সেজন্য ‘অনলি মি’ করে রাখুন। কারা কারা আপনাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারে, সেখানেও ‘এভরিওয়ানে’র বদলে ‘ফ্রেন্ডস অফ ফ্রেন্ডস’ করে রাখুন। তাহলে কেবল মিউচুয়াল ফ্রেন্ডরাই আপনাকে রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারবে। আর নিজের মোবাইল নাম্বারটিকে সবসময় একাউন্টের সাথে লিঙ্ক করে রাখুন। আর ফেসবুক তো আফটার অল একটা সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটই বটে। তাই বেশী ছবি না দেওয়াই ভালো। আর সবসময় নিজে কি করছেন সেটা তো বিশ্বসুদ্ধু লোককে না জানালেও চলে, তাই না?
তাই ফেসবুক করুন বুঝে শুনে, লিমিট রেখে। আর এবার নো টেনশন। আজই জলদি নিজের ফেসবুকের সিকিউরিটি ডিটেলস চেক করে খোলনলচে পালটে ফেলুন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…