স্বামীর এই পাঁচটি বিষয় স্ত্রীরা একদম পছন্দ করেন না

একটি সম্পর্ক দাঁড়িয়েই থাকে পারস্পরিক জানা বোঝার মধ্যে দিয়ে।এই জানা বোঝা শক্ত, মজবুত করার জন্য দরকার পরস্পরের ভালো লাগা, মন্দ লাগাকে সম্মান করা, ভালো ভাবে জানা। আজকের আর্টিকেল আমাদের পুরুষ বন্ধুদের জন্য। আমাদের পুরুষ বন্ধুদের জানা উচিত এমন কিছু জিনিস আছে যা তাঁদের স্ত্রীরা পছন্দ করেন না। স্বামীদের থেকে এই কয়েকটা জিনিস আশা করেন না কোনও স্ত্রী। কী সেগুলো? আসুন দেখে নিই।

১. স্ত্রীকে গুরুত্ব না দেওয়া

দেখুন, আপনি হয়তো স্বামী হিসেবে ভেবেই নিয়েছেন যে আপনার স্ত্রী জানে আপনি পাশে আছেন। কারণ স্বামী হিসেবে পাশে থাকা আপনার কর্তব্য। কিন্তু কি বলুন তো, কিছু কিছু সময় কর্তব্য নয়, কিছু কাজ করতে হয়। এমন কাজ আপনাদের করতে হবে যাতে আপনার স্ত্রীর মনে হয় আপনি তাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন, তার কথা শুনছেন।

কখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিজে নিয়ে নেবেন না। আলোচনা করুন আপনার স্ত্রীর সঙ্গে, তার মতামত নিন। এতে আপনার স্ত্রীও বুঝবেন আপনি তাকে গুরুত্ব দেন। মনে রাখবেন, আপনার পার্টনার আজকের দিনের শিক্ষিত মেয়ে। এটা জেনেও আজও আমরা অনেকেই বাইরের কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর সিদ্ধান্ত বা মত নিইই না। এটা কিন্তু আপনার স্ত্রীকে আঘাত করে। তাই ওনার কথা শুনুন, যুক্তি দিয়ে মানুন।

২. মন খুলে কথা না বলা

আপনি হয়তো আপনার স্ত্রীর মুখে শুনেছেন একটা কথা অনেক বার। আপনারা প্রেম করার সময়ে অনেক খোলাখুলি আলোচনা করতেন অনেক বিষয়ে। এখন সেটা করেন না আপনি আর। এটা অনেকেই ভুল করে ফেলেন।

বিয়ের পর কিন্তু সম্পর্কের ভিতরকার রসায়ন একদমই বদলায় না দু’জনের মধ্যে। বরং আপনি বিয়ের পর বউএর ওপর আরও বেশি নির্ভর করতে পারেন। মন খুলে কথা না বললে উনি ভাবতে পারেন আপনি ওনাকে অযোগ্য মনে করেন। বরং দু’জনে একটা মজবুত টিম হিসেবে থাকতে পারেন। তাই তাকে সব কথা বলুন, নিজেই আকাশকুসুম ভাববেন না সব কিছু নিয়ে। এতে আপনার স্ত্রী খুশিই হবেন।

৩. বাইরের কাজ ঘরে আনা

জানি, আজকের দিনে আমরা সবাই খুব খুব ব্যস্ত।এতই ব্যস্ত যে ঘর আর অফিসের পার্থক্য করতেও ভুলে গেছি। এটা কিন্তু কোনও স্ত্রী মেনে নেবেন না।তিনি তো চাইবেনই আপনি সারাদিনের পর তাকে সময় দেবেন। তাই অফিসের কাজ আর চিন্তা অফিসেই রাখুন। বাড়িতে ল্যাপটপ খুললে অফিসের কাজের জন্য নয়, বরং একসঙ্গে আউটিং-এ যাওয়ার প্ল্যান করতে খুলুন।

অনেক দিন হয়তো আপনি ওনার হাতে হাত রাখেন নি, পাশে বসেন নি ভালো করে। এগুলো করা দরকার। অফিসের স্ট্রেস বাড়ির দরজার বাইরে রেখে আসুন। সমীক্ষা কিন্তু বলছে, বর্তমানে মহিলাদের থেকে পুরুষরা অনেক বেশি স্ট্রেসে থাকছেন। তাই সাবধান হন। আপনার স্ত্রীও যদি বাইরে কাজ করেন আর তিনি যদি বাড়িতে কাজ না করে থাকতে পারেন, তাহলে আপনিও শিখুন এটা। একটা ভালো সম্পর্কের জন্য কিন্তু পার্সোনাল আর প্রফেশনাল লাইফের ব্যাল্যান্স খুব দরকার।

৪. স্ত্রীর তুলনা অন্য মেয়ের সঙ্গে করা

এই বিষয়টা আপনার স্ত্রীকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করে জেনে রাখুন। আপনার স্ত্রী একজন মানুষ আর মানুষ বলেই তিনি তার মতো। অমুকের বৌ কি ভালো এই বিষয়ে, তমুকের বৌ এটা খুব ভালো পারে আর তুমি…. এই সব বলে ওনাকে বিব্রত করবেন না। মজা করার জন্যও বলবেন না।

উনিও হয়তো এমন কিছু পারেন যেটা অন্য অনেকে পারেন না। সেটা কখনও জানতে চেয়েছেন? হয়তো আপনার স্ত্রীর ব্যবহার না করা ঘুঙুরে ধুলো জমে গেছে। হয়তো ওনার সম্পূর্ণ না করা পি.এইচ.ডি থিসিসটা এখনও কোনও এক খাঁজে পড়ে আছে।

এবার তুলনা ছেড়ে আপনার স্ত্রীর মনোবল বাড়ান। তাকে তার নিজস্ব পরিচয় তৈরি করতে সাহায্য করুন। আর সব সময়ে অন্যের সঙ্গে তুলনা করলে আপনাকে নিয়ে আপনার স্ত্রীর মধ্যে একটা অনিশ্চয়তাও তৈরি হবে। সেটা কিন্তু সম্পর্কের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়।

৫. একঘেয়েমি আনছেন কী?

সম্পর্ক জিনিসটাকে আপনি হয়তো ‘টেকেন ফর গ্রান্টেড’ করে নিয়েছেন। ভুলেই গেছেন এখানেও নতুন নতুন করে জল, সার দেওয়ার দরকার আছে। তার বদলে একই রকম রোজ জীবন কাটাতে কাটাতে আপনি আপনার স্ত্রীকে একটি একঘেয়ে জীবন দিচ্ছেন।এটা আপনার স্ত্রীর ভালো লাগবে কেন? আপনার স্ত্রীকে একটু সারপ্রাইজ দিন।

গাড়ি থাকলে একটা লং ড্রাইভ, দু’দিনের সারপ্রাইজ ট্যুর, একদিন ডিনারের প্ল্যান, এই সবই কিন্তু সম্পর্কে নতুন করে মাত্রা যোগ করে। একঘেয়েমি ভাব কেটে দু’জন দু’জনকে চিনতে পারেন। এই চেনাটাই আপনার স্ত্রী বেশি করে পছন্দ করেন।

এই কথাগুলো খুবই ছোটখাটো, কিন্তু কার্যকরী। হয়তো আপনারা জানতেন, কিন্তু ভুলে গিয়েছিলেন। দাশবাসের পক্ষ থেকে আমরা শুধু আপনাদের মনে করিয়ে দিলাম আরেকবার।