আপনার সাজগোজ ও মুখের সৌন্দর্য মিনিটেই পণ্ড করে দিতে পারে ত্বকের উন্মুক্ত লোমকূপ বা পোরস। যাদের মুখের লোমকূপগুলি বড়ো তাদের বেশিরভাগেরই অভিযোগ যে মুখ দেখতে লাগে মলিন বা ফ্যাকাশে।
মুখের পোরস বড়ো হলে তার এক্সপোজার লেভেল বেড়ে যায়। ফলে বাইরের ধুলোবালি বা মেকআপের অবশিষ্ট অংশ আপনার ত্বকের রন্ধ্রে জমা হতে শুরু করে। যার জন্য ত্বক থেকে সিবাম সিক্রেসন বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্যাকটেকিয়ার আঁতুরঘর হয়ে ব্রণ ও ব্ল্যাকহেডসের আস্তানা হয়ে যায় আপনার স্কিনে। কিন্তু আজ আমরা বলবো ৫টি ঘরোয়া উপায় যার দ্বারা আপনি এই বিপত্তি থেকে মুক্তি পাবেন।
লোমকূপ বড়ো হবার কারণ:
- উচ্চহারে ত্বকের তৈলাক্তভাব বৃদ্ধি পাওয়া বা ত্বকের সিবাম ক্ষরণ বেড়ে যাওয়া।
- ত্বকের প্রাচীর ভেঙে গিয়ে স্থিতিস্থাপকতা হারানো।
- ত্বকে অবস্থিত লোমের হেয়ার ফলিকল মোটা হলে।
- ত্বকের কোলাজেন প্রোডাকশন বেড়ে গেলে।
- ত্বক বেশিক্ষন ধরে সরাসরি সূর্যালোকের উপস্থিতিতে থাকলে সানবার্ন হয়।
- জিনগত বা হরমোনাল কারণে।
ঝটপট দেখে নিন পাঁচটি উপায়:
১) মুলতানি মাটি:
- মুলতানি মাটিকে অল কিউর কম্পোনেন্ট বলা হয়ে থাকে যা লোমকূপের সমস্যাতেও ভালো কাজ দেয়।
- মুলতানি মাটি ত্বকের প্রয়োজনের বেশি তেল এবসর্ব করে এবং স্কিনের এক্সফোলিয়েশন ঘটায়।
- এছাড়া ডার্ক মার্কস ও স্কার কমিয়ে সূর্যরশ্মির ডাইরেক্ট প্রভাব এর ক্ষতির থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
পদ্ধতি:
- ২টেবিলচামচ মুলতানি মাটি ও ১টেবিলচামচ গোলাপজল নিয়ে একটা হালকা পেস্ট বানিয়ে নিন।
- তারপর সেটা স্কিনে অ্যাপ্লাই করুন। ১৫-২০মিনিট মতো স্কিনে রাখুন ও শুকনো হয়ে যাবার ওয়েট করুন।
- তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে তিন দিন করে এটি ব্যবহার করুন একমাস।
২) বরফ কুচি:
- বুঝতেই পারছেন বরফ একটি অত্যন্ত রিফ্রেশিং উপাদান যেটা মুখে মেকআপের আগেও বহুবার ব্যবহার করা হয়।
- বরফকুচি মুখের ত্বকের দেয়াল সংকুচিত করে দেয় এবং রক্তসঞ্চালন এর মাত্রা বাড়ায়। ফলে স্কিন আগের চেয়ে প্রাণবন্ত হয় ও ছিদ্রমুক্ত হয়।
পদ্ধতি:
- একটা বরফ এর বার নিয়ে সেটা স্মাশ করে কয়েক টুকরো করে ফেলুন।
- সেই টুকরোগুলোকে একটা কাপড়ে বেঁধে নিন।
- এবার কাপড়ে প্যাঁচানো বরফ কুচি ৫মিনিট মতো ঘষে ঘষে মুখের সর্বত্র লাগিয়ে নিন।
- একটা আনোখা ফিল পাবেন। এরপর মুখ শীতল হয়ে এলে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে দুইবার রিপিট করুন।
৩)টোম্যাটোর গুন:
- টমেটো এমনিতেই ভিটামিন সি বা এস্কর্বিক এসিডে সমৃদ্ধ যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও সংকোচন ঘটিয়ে লোমকূপ বন্ধ করে।
- স্কিনের স্বাভাবিক এক্সফোলিয়েশন এর বৃদ্ধি ঘটায়।
পদ্ধতি:
- একটা গোটা টমেটো নিন এবং সেটা হাফ করে তার নির্যাস একটি পাত্রে রাখুন।
- এবার সেটা তালুতে অল্প করে নিয়ে মুখে ম্যাসাজ করে ফেলুন।
- শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। উপকার পাবেন।
- সপ্তাহে তিন বার করে ব্যবহার করুন।
- তবে যাদের টমেটোতে অ্যালার্জি আছে তারা এটি ব্যবহার করবেন না।
৪)সুগার স্ক্রাব:
- সুগার স্ক্রাব প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার ও টোনার এর কাজ করে।
- এটির দৈনিক ব্যবহার মুখ থেকে লোমকূপের উল্লেখযোগ্য হ্রাস মাত্রা সাধন করে।
পদ্ধতি:
- মধু নিন ১টেবিলচামচ ও তার সাথে কিছুটা চিনির গুঁড়ো মিশিয়ে বানিয়ে ফেলুন সুগার স্ক্রাব।
- এবার এটিকে মুখের উপর চক্রাকারে লাগান। ১০-১৫দিন শুকিয়ে যাবার জন্য তারপর ধুয়ে ফেলুন জল দিয়ে।
- কথা দিচ্ছি এটা ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমাবে ও কোমলভাব ফিরিয়ে আনবে।
- চাইলে এটা সপ্তাহে চার দিন স্নানের আগে ট্রাই করতে পারেন।
৫) আন্ডার ফান্ডা:
- নাম শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খাবেন না। ডিমের কথাই হচ্ছে। তবে ডিম এখানে খাবার নয় মুখের কাজে আসবে।
- ডিম স্কিন টোন ঠিক রাখে, পোরস ছোট করে ও একনে দূর করতেও কাজে লাগে।
পদ্ধতি:
- একটা গোটা ডিমের সাদা অংশ নিন তার সাথে দিন ২টেবিল চামচ ওটমিল ও একটা আধখানা লেবুর কোয়ার রস।
- একসাথে এগুলোকে মিক্স আপ করে নিন ভালো করে ফেটিয়ে। তারপর মুখে লাগিয়ে নিন বেশমতো।
- ৩০মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন ঠান্ডা জল দিয়ে। দাগছোপ এর নাম নিশান থাকবেনা।
- সপ্তাহে দুবার করে ব্যবহার করুন এটি।