বাজেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বলিউডের শুটিং ডেস্টিনেশন এখন অনেক পালটে গেছে। দেশের ভিতরে যেমন কাজ হচ্ছে, দেশের বাইরেও শুট বাদ যাচ্ছে না। কিন্তু বরাবর বলিউডের পছন্দের তালিকায় আমাদের কলকাতা কিন্তু উপরের দিকেই থাকে। কোনও গভীর, মনের খুব কাছাকাছি, নিপাট ভালো লাগার সিনগুলো কলকাতাকে ভিত্তি করেই তৈরি হয়। কলকাতার হেরিটেজ, সংস্কৃতি, পারফেক্ট ফটোজেনিক লোকেশন সবই পরিচালকদের বারবার টানে কলকাতার প্রতি।
কাহানি সিনেমার শুটিং হয়েছিল এই কলকাতায়। কালীঘাট, শরত বোস রোড বা মোনালিসা গেস্ট হাউস, এই সব জায়গা আমরা সিনেমায় বারবার দেখতে পাই। কাহানি সিনেমার গল্প যেভাবে এগিয়েছে তাতে কলকাতাতে শুট হওয়াটা খুবই দরকার ছিল। সিনেমায় বিদ্যা বালানের মতো অভিনেতাদের অভিনয় যেমন নজর কেড়েছিল, তেমনই কলকাতার পুজো, রাস্তাঘাট যেভাবে দেখানো হয়েছিল, তা খুব সুন্দর লাগছিল। আর সেখানে কুমোরটুলির অংশটি বেশ ভালো ভাবে তুলে ধরা হয়েছিল।
২০০৯ সালের লাভ আজ কাল সিনেমার শুটিং হয় কলকাতার রাসবিহারী অ্যাভিনিউতে। দীপিকা পাডুকোন আর সেইফ আলি খান এই সিনেমায় মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। এখন আপনারা ভাবছেন রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের মতো ব্যস্ত জায়গায় আবার শুটিং হল কোথায়! আসলে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের একটি বনেদি বাড়িতে এই সিনেমার শুটিং হয়।
বরফি সিনেমাটা দেখেনি এমন ভারতীয় খুব কম। প্রিয়ঙ্কা চোপড়া আর রনবীর কাপুরের অভিনয়ের পাশাপাশি হাওড়া এখানে প্রাণবন্তভাবে উঠে এসেছে। কিছুটা অংশ শুট করা হয় দার্জিলিংয়েও। পরিচালক যদি হন অনুরাগ বসুর মতো বাঙালি, তাহলে কলকাতা যে বলিউডের এরকম লিডিং সিনেমায় উঠে আসবে তা বলাই বাহুল্য।
আয়ুষ্মান খুরানা আর ইয়ামি গৌতমের অভিনীত ভিকি ডোনর সিনেমার প্লট ছিল কলকাতা, বিশেষ করে ভিক্টোরিয়া। এখানেও পরিচালক বাঙালি, সুজিত সরকার। তাই হয়তো এতো ভালো করে ভিক্টোরিয়া, কলকাতা তার সমস্ত রোমান্টিকতা নিয়ে এখানে উপস্থিত হতে পেরেছে। বাঙালি সংস্কৃতি, বাঙালি বিয়ে, দুর্গাপুজো সব মিলে কলকাতা এখানে জীবন্ত। সম্প্রতি রিলিজ করেছিল ধরক সিনেমা, জাহ্নবী কাপুর অভিনীত। সেখানেও কিন্তু ভিক্টোরিয়া খুব ভালো ভাবে উঠে আসে।
যদিও বিতর্ক হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিতর্কের থেকেও গানটা বেশি জনপ্রিয়। মনে পড়ছে গানটা, তুনে মারি এন্ট্রি অউর দিল মে বাজি ঘণ্টি, গুন্ডে সিনেমার গানটা! সেখানে কলকাতা হাইকোর্টের সামনে রনভীর সিং, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া আর অর্জুন কাপুরের নাচটা নিশ্চয়ই মনে আছে সবার। আসলে কলকাতা হাইকোর্ট চত্বর এভাবে নাচের জন্য খুব একটা ব্যবহার করা হয়নি। তাই এই জায়গাটা খানিক স্পেশাল হয়ে রয়েই গেল।
মূলত কলকাতার পুরনো অ্যাংলো ইন্ডিয়ান কমিউনিটি থাকেন এখানে। উফ! বড়দিনে কলকাতায় আছে কিন্তু বো ব্যারাকে যায়নি এমন মানুষ কমই আছেন। এই সময়ে এখানে নানা রকম ওয়াইন, মোমো, ডিমসাম আরও কত কিছু খাবার পাওয়া যায়। পার্কস্ট্রীটের পাশাপাশি কলকাতার বড়দিন মানে বো ব্যারাক। এখানে শুট হয়েছিল ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সির, অভিনয়ে সুশান্ত সিং রাজপুত। কলকাতার অন্যান্য জায়গাও উঠে আসে এখানে, কিন্তু পরিচালক দিবাকর ব্যানার্জি বো ব্যারাক খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেন।
কি ভাবছেন! এই জায়গায় শুটিং! পরিচালক যদি হন সুজিত সরকার তাহলে সবই সম্ভব। আমরা পিকু সিনেমার কথা বলছি। অমিতাভ বচ্চন, দীপিকা পাডুকোন, ইরফান খান অভিনীত এই সিনেমায় নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোর মতো জায়গাও ব্যবহার করা হয়েছে। মৌলালি থেকে খানিক এগিয়ে এই জায়গাও যে শুটিং স্পট হতে পারে সেটা কিন্তু পিকু সূত্রেই আমরা বুঝেছি।
উত্তর কলকাতা বললেই আমাদের আলাদা করে কিছু বলতে হয় না। বাগবাজার, শোভাবাজার, কুমোরটুলি সব যেন এক ওই উত্তর কলকাতা নামের ছাতার নিচে চলে আসে। আর উত্তর কলকাতা চেনা যায় তার গলি দিয়ে। সেই গলি উঠে এসেছে বুলেট রাজা সিনেমায়। সেইফ আলি খান টানা রিক্সা চালাচ্ছেন আর রিক্সায় বসে সোনাক্ষী সিনহা, মনে আছে নিশ্চয়ই সিনটা।
কলকাতায় শুটিং আর হাওড়া ব্রিজ আসবে না তা তো হয় না। যুবা সিনেমায়, যেখানে অভিনয় করেন অভিষেক বচ্চন, রানি মুখার্জি, অজয় দেবগণ, সেই সিনেমায় উঠে আসে হাওড়া ব্রিজ। হাওড়া ব্রিজ কিন্তু গুন্ডে সিনেমাতেও বেশ ভালো ভাবে উঠে আসে।
এই জায়গা উঠে আসে পরিণীতা সিনেমায়। পরিণীতা নিয়ে আলাদা করে আর কি বলার! যার লেখার ভিত্তিতে এই সিনেমা তিনি স্বয়ং বাংলা সাহিত্যের রত্ন, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। পরিচালক নিজে বাঙালি, প্রদীপ সরকার। সুতরাং কলকাতা ছাড়া আর কোথায় এর শুটিং হবে! বিশেষ করে জেমস প্রিন্সেপ মেমোরিয়াল এক গুরুত্বপূর্ণ স্পট হয় এই সিনেমার জন্য।
কলকাতার সমস্ত রূপ, রস নিয়ে এই সিনেমা তৈরি।
এটা ঠিক কলকাতা বলব না, কিন্তু কলকাতা থেকে যে খুব দূর তাও নয়। এটি আসলে হুগলিতে, তাই কলকাতার কাছেই। রনভীর সিং আর সোনাক্ষী সিনহা অভিনীত লুটেরা সিনেমায় এই রাজবাড়ি আসে। আপনারা তাই এর অন্দরমহল সিনেমার সূত্রে দেখেই থাকবেন। এখানে কিন্তু সাধারণ মানুষও বুকিং করে থাকতে পারেন।
কলকাতার এই জায়গা বিখ্যাত হয় অনুষ্কা শর্মার পরি সিনেমার সূত্রে। পরি এখনও পর্যন্ত ভারতে তৈরি হওয়া ভয়ের বা হরর সিনেমার অন্যতম। তার শুটিং হয় এই করোলবেরিয়ায়। এখানেই শুটিং চলাকালীন এই টেকনিশিয়ান বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। রাতের কলকাতাকে ভয়ানক মোড়ক দিয়ে এই সিনেমায় সুন্দর ভাবে দেখানো হয়েছে।
আসলে কলকাতা এই সব সিনেমায় আলাদা আলাদা ভাবে নিজেকে নিয়ে হাজির। যদি কলকাতাকে বুঝতে চান, খুঁজতে চান, এই সিনেমাগুলোর মধ্যে দিয়ে দেখুন, অন্য রূপ দেখতে পাবেন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…