আমাদের সকলেরই ধারণা যে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চুলের নানা সমস্যা বাড়তে থাকে। সে চুল পড়াই হোক কি চুলের অকালপক্কতা, সবই হতে শুরু করে ওই চল্লিশের পর থেকে। কিন্তু চল্লিশ বছর বয়স মানেই তো জীবন শেষ হয়ে যাওয়া নয়, বুড়িয়ে যাওয়া তো নয়ই।
আমার তো মনে হয় চল্লিশ বছর বয়সে এসে আপনার মধ্যে যে গাম্ভীর্য আসে এবং চেহারায় যে ভারিক্কি ভাব আসে, ঠিক মতো ক্যারি করলে তা কিন্তু আপনার সিগনেচার হতে পারে। তাই যত্ন শুরু হওয়া উচিৎ নতুন করে। আসুন তাই আজ জেনে নিই চল্লিশ বছর বয়স হয়ে গেলে কীভাবে চুলের যত্ন নেবেন তার দশটি ফান্ডা।
চল্লিশের পর চুলের মেলানিন কমতে শুরু করে। তাই চুলের রঙ সাদা হতে শুরু করে। আর সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় মহিলাদের চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে, কারণ এই সময়ে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে আসে। এর পাশাপাশি ক্যামিকেল বেসড কালার ব্যবহার কিন্তু স্ক্যাল্পের ক্ষতি করে, খুশকির মতো সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। চুলের ভিত শক্ত থাকে না আর। তাই এই সব সমস্যা থেকে সমাধানের জন্য দরকার ঠিক যত্ন। আজ দিলাম তারই সুলুক সন্ধান।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের স্ক্যাল্প বেশি মাত্রায় শুষ্ক হতে শুরু করে। মরা চামড়া জমতে শুরু করে স্ক্যাল্পে। আর এর থেকেই হয় অনেক সমস্যা। তাই এই মরা চামড়া আগে দূর করা দরকার। আর সেই জন্যই ব্যবহার করুন শ্যাম্পু, নিয়ম করে। সপ্তাহে দু বার শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু করার আগে বা আগের দিন রাতে হাল্কা গরম তেল দিয়ে অন্তত ২০ মিনিট চুল ম্যাসাজ করতে ভুলবেন না।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা চুল রঙ করতে হেয়ার ডায়ার ব্যবহার করে থাকি। আর এটি আমরা করি সারা মাথা জুড়ে। অর্থাৎ সাদা চুলের পাশাপাশি কালো চুলেও রঙ ব্যবহার করে ফেলি। কিন্তু এটা করলে চলবে না। শুধু সাদা চুলই রঙ করুন আর তাও যতটা কম সম্ভব।
চুল তাড়াতাড়ি শুকিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা অনেক সময়ে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করি। আর চুলের স্টাইল করতে ব্যবহার করি হেয়ার স্ট্রাটার। এগুলো ব্যবহার করুন, কিন্তু যতটা কম করা যায়। চুল পারলে সাধারণ ভাবেই শুকোতে দিন। একান্ত তাড়া থাকলে তবেই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করুন। আর একই কথা হেয়ার স্ট্রাটারের ক্ষেত্রে। একদমই স্টাইল করতে বারণ করা হচ্ছে না, কিন্তু চেষ্টা করুন এটি ছাড়া স্টাইল করার। বারবার এই সব ব্যবহারে চুল কিন্তু ভেঙে যেতে পারে আর শুষ্ক হতে পারে।
চুলকে তার নিজের মতো করে থাকতে দিন। সব সময়ে চিরুনি ব্যবহার করে চুল গুছিয়ে রাখার দরকার নেই। তাই বারবার চিরুনি ব্যবহার বন্ধ করুন। আর তার সঙ্গে এটাও মনে রাখুন, খুব শক্ত করে চুল ব্যান্ড দিয়ে বাঁধা চলবে না। এই সবই কিন্তু চুল পড়ার অন্যতম কারণ।
চুল তো আমাদের শরীরের থেকে আলাদা কিছু নয়। তাই শরীর ভালো রাখতে যেমন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হয় তেমনই চুলের জন্যও ঠিক মতো ব্যাল্যান্স ডায়েট জরুরী। রোজের খাদ্য তালিকায় সবুজ সবজি, ফল যেন অবশ্যই থাকে। এই সবের উপকারিতা কিন্তু চুলের জন্য খুব দরকার। সবজিতে যে ভিটামিন বা মিনারেল থাকে তা চুলকে মজবুত করে।
আমাদের চুলের প্রধান উপাদানই কিন্তু প্রোটিন। তাই চুলের বৃদ্ধি ধরে রাখতে বা চুলের যত্ন নিতে কিন্তু প্রোটিন ব্যবহার করুন। এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হল ডিম। নিয়ম করে ডিম খান। ডিমে থাকা ওমেগা ৩ আর অ্যামিনো অ্যাসিড চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। এছাড়াও অঙ্কুরিত ছোলা, কড়াইশুঁটি এই সবও নিয়মিত ডায়েটে রাখতে হবে।
চুলের যত্নের জন্য চুলের কন্ডিশনিং খুব দরকার। হেয়ার ডাই ব্যবহার করার পর তো অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিৎ। ডাই ব্যবহার করলে চুল যে ভাবে শুষ্ক হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, কন্ডিশনার ব্যবহার করলে তা হয় না।
সপ্তাহে এক দিন চুলের যত্নের জন্য প্রোটিন প্যাক চুলে ব্যবহার করা উচিৎ। আপনি দোকানে ভালো প্রোটিন প্যাক পেতেই পারেন। কিন্তু ঘরেও আপনি এটি তৈরি করতে পারেন।
উপকরণ:
২ টি ডিম, ২ চামচ দই, ১ চামচ মধু
পদ্ধতি:
সবকটি উপকরণ একটি পাত্রে নিয়ে মিশিয়ে নিন ভালো করে, যেন কোনও লাম্প না থাকে। তারপর তা চুলে ব্যবহার করুন, লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। এর পর ধুয়ে নিন শ্যাম্পু দিয়ে।
আপনি যখন চুলে শ্যাম্পু করবেন তখন সেই শ্যাম্পুর সঙ্গে খানিক চিনি মিশিয়ে নিন। চিনি শ্যাম্পুর মধ্যে থাকা রাসায়নিক উপাদানের প্রভাব অনেকটা কমিয়ে আনে। এর পাশাপাশি স্ক্যাল্পের ময়েশ্চার ধরে রাখে। তাই চুল থাকে সিল্কি আর উজ্জ্বল। আপনার বয়স যখন চল্লিশ হবে তখন কিন্তু এটা আপনাকে করতেই হবে।
চুল নষ্ট হওয়ার একটা বড় কারণ হল রোদের সংস্পর্শে চুলের আসা। ক্ষতিকর আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি চুলের জন্য খুবই খারাপ ফলাফল ডেকে আনে। চুলের শুষ্কতা, চুল পড়ে যাওয়া এই সবই কিন্তু হয় রোদের জন্য। কিন্তু ঘরে তো বসে থাকা যাবে না। তাই চুল ঢেকে রাখুন স্কার্ফ ব্যবহার করে। আর ছাতা ব্যবহার করতে একদমই ভুলবেন না।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…
View Comments
Dhannobad..
Khub valo laglo