মাথায় ঘন একরাশ কালো চুল কার না স্বপ্ন বলুন তো। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে ততই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মাথার সামনের অংশ। অনেক ট্রিটমেন্ট টোটকা মেনেও কোনও কিছুতেই ফল পাচ্ছেন না। কিন্তু খতিয়ে দেখলে দেখবেন ঘাটতি রয়েছে আপনার খাদ্যতালিকায়।
সঠিক খাওয়া-দাওয়া কিন্তু আপনার চুল পড়ার সমস্যা কমিয়ে দিতে পারে সেইসঙ্গে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। চুল পড়া কমিয়ে মাথায় নতুন চুল গজানোর জন্য খান এইসব খাবার।
১) কড়াইশুঁটি
- বিশেষজ্ঞরা বলেন কড়াইশুঁটি চুলের জন্য খুবই ভালো।
- চুলের মধ্যে থাকা কেরাটিন হল চুলের প্রাকৃতিক প্রোটিন।
- এই প্রোটিনের অভাবে চুলের ব্রেকেজের সমস্যা দেখা দেয়।
- যা পূরণ হয় কড়াইশুঁটি খেলে। এতে চুলের বৃদ্ধিও হয় তাড়াতাড়ি।
- স্যুপ হোক বা ডাল কড়াইশুঁটি রাখুন পাতে।
২) আমলকী
- মান্ধাতার আমল থেকে আমলকীকে চুলের খাবার হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
- আমলকীতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি চুলের পরিচর্যায় বিশেষ উপকারী।
- আমলকির কষভাবের জন্য কাঁচা খেতে প্রথম প্রথম অসুবিধা হতে পারে ।
- তবে প্রথমে অল্প করে শুরু করে আস্তে আস্তে সপ্তাহে যদি অন্তত ৫টি গোটা আমলকি কাঁচা খাওয়া অভ্যেস করতে পারেন তাহলে খুবই ভালো।
৩) সামুদ্রিক মাছ
- ডারমেটোলজিস্টরা বলেন, সামুদ্রিক মাছে থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা চুল পড়া রোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- তাই সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন করে সার্ডিন বা টুনা ফিশ খাওয়া অভ্যেস করুন।
- যেকোনো সামুদ্রিক মাছ সপ্তাহে একদিন পাতে রাখার ব্যবস্থা করুন।
৪) ডিম
- মাথায় ডিম মাখার পাশাপাশি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন ডিম সেদ্ধ।
- ডিমের মধ্যে থাকা প্রোটিন চুলের পুষ্টি জোগাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা না থাকলে প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে একটা করে ডিম খান।
৫) সবুজ শাক সবজী
- সবুজ শাক-সবজী ভরপুর ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ।
- আর এর মধ্যে পালং শাক সবচেয়ে আদর্শ। পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও আয়রন।
- তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন পালং শাক-সহ অন্যান্য শাকসবজী।
- পালং শাক অল্প সিদ্ধ করে নুন ও মরিচ-সহযোগে খেতে পারেন।
৬) ওটস
- ব্রেকফাস্টের জন্য এক অনবদ্য খাবার হল ওটমিল।
- জিঙ্ক, কপারের মতো খনিজের পাশাপাশি ভিটামিন-বি সমৃদ্ধ হওয়ায় ওটস চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগাতে ভীষণভাবে সাহায্য করে।
- তাই প্রতিদিন সকালে দুধ দিয়ে খান একমুঠো ওটস।
৭) বাদাম
- আমন্ড, আখরোট, কাজু হোক বা চিনাবাদাম- যেকোনও ধরণের বাদামই চুলের জন্য খুবই ভালো।
- আর সবচেয়ে ভালো হয় যদি প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে ৪টে আমন্ড এবং ৪টে করে কাজু বাদাম খেতে পারেন।
- কারণ বাদামে রয়েছে বায়োটিন, ভিটামিন বি, ওমেগা থ্রি এবং ফ্যাটি অ্যাসিড যা চুলের স্ক্যাল্পের কিউটিকলগুলিকে মজবুত করতে সাহায্য করে, ফলে চুল পড়া বন্ধ হয়।
৮) স্ট্রবেরি
- অ্যালোপেশিয়ার সমস্যা যদি কারওর থাকে তাহলে তার স্ট্রবেরি খাওয়া খুবই দরকার।
- স্ট্রবেরি অ্যালোপেশিয়া রোধ করে চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে।
- এতে থাকা ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি সামগ্রিকভাবে চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
- প্রতিদিন ৩-৪টি স্ট্রবেরি খান।
৯) দুধ
- দুধ হল ভরপুর ক্যালসিয়ামের উৎস।
- শুধু তাই নয় দুধে থাকা বায়োটিন চুল পড়া রোধ করতে এবং নতুন চুল গজিয়ে চুলের ঘনত্ব বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- চিকিৎসকের নিষেধ না থাকলে প্রতিদিন রাতে শোওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধ খান।
১০) গাজর
- ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ গাজর চুলের বৃদ্ধিতে দারুণ সাহায্য করে।
- ভিটামিন-এ মাথার স্ক্যাল্পে সিবাম (Sebum) নামে একপ্রকার তৈলাক্ত রাসায়নিক তৈরি করতে সাহায্য করে।
- এটি মাথার স্ক্যাল্পের রুক্ষতা দূর করে চুলের গোড়া পোক্ত করতে সাহায্য করে।
- তাই গাজর স্লাইস করে কেটেও স্যালাড হিসাবে খেতে পারেন।
- আবার মিক্সড ভেজ তরকারি বানানোর সময় গাজর ব্যববহার করতে পারেন।
- সেইসঙ্গে ভেজিটেবিল স্টুতেও গাজর ব্যবহার করুন।