এক নয়, দুই নয়, দশ নয়, কুড়ি নয়, একেবারে চুয়াল্লিশটা বিউটি টিপস একসঙ্গে রইল আপনাদের জন্য যা আপনাদের অধিকাংশ সমস্যার সমাধান করে দেবে।
কথায় বলে মুখ নাকি মনের আয়না। আমি বলি খালি মনের না পেটেরও আয়না। আপনার পেট যদি পরিষ্কার না থাকে, তাহলে তার প্রভাব কিন্তু আপনার মুখে আর স্কিনে পড়বেই। ঠিক ভাবে পেট পরিষ্কার না হলে, রক্ত শুদ্ধ না থাকলে আপনার মুখে ফুসকুড়ি হবেই, কোনও ক্রিম কাজ দেবে না।
লিভারের সমস্যা থাকলে গায়ে বাজে গন্ধ আসবেই, বডি স্প্রে করে বেশি ক্ষণ ঢাকা যাবে না। তাই পেটের দিকে আগে যত্ন নিন। খুব তেল ঝাল খেলে তেলতেলে ত্বক কোনও দিন ঠিক হবে না। তাই ঠিক মতো হাল্কা পরিপূর্ণ পুষ্টি মেনে খাবার খান। সুষম খাবার গ্রহণ করুন ঠিক ঠিক সময়ে।
জানেন তো, আমাদের শরীরের ৭০ শতাংশ জল। তাই শরীরের পি এইচ ব্যাল্যান্স বজায় রাখতে জল নিয়মিত পান করতেই হবে। অন্তত তিন লিটার জল তো গরম কালে খেতে হবেই।
তবেই শরীর হাইড্রেটেড থাকবে, ত্বক শুকিয়ে যাবে না। শীতকালেও কিন্তু জল খেতে হবে অনেক বেশি। তবেই ত্বক থাকবে ঝকঝকে আর উজ্জ্বল। জলই কিন্তু চকচকে ত্বকের আসল চাবিকাঠি।
নিজেদের খাবারের ওপর বিশেষ নজর দিন। এই খাবারই কিন্তু ঠিক করে দেবে আপনার শরীর আর ত্বক, দুইই কেমন থাকবে। তেলতেলে খাবার বিশেষ করে খাবেন না খুব একটা।
ঠিক মতো ডায়েট মেনে খান। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট সব যেন আপনার শরীরে ঠিক ভাবে ঢোকে। তবেই কিন্তু তার ফলাফল আপনি পাবেন আপনার ত্বকে।
গরমে অবশ্যই ফল বা ফলের রস বেশি করে খান। ডাবের জল খান নিয়ম করে, এতে শরীর ঠাণ্ডা থাকবে। ফলের রস, ডাবের মধ্যে যে মিনারেলস আছে তা ঘামের ফলে যে নুন শরীর থেকে বাইরে যায় তার ঘাটতি পূরণ করে।
ফলের রস মানে আবার বাজার থেকে কিনে আনা রস বলছি না। ঘরে বানিয়ে খান, এতেই উপকার বেশি। শরীর হাইড্রেটেড থাকবে আবার ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।
ত্বক ভালো থাকবে যখন ত্বকের প্রতি অংশে অক্সিজেন যাবে। আর ত্বকে অক্সিজেন বেশি করে যাবে তখনই যখন রক্ত চলাচল ভালো হবে। আর তার জন্য দরকার রোজ নিয়ম করে এক্সারসাইজ। যোগাভ্যাস করতে পারেন অন্তত ১৫ মিনিট। জিমে গিয়েও এক্সারসাইজ করতে পারেন। ঘাম ঝরলে টক্সিন তার সঙ্গে বেরিয়ে যায় আর ত্বক ভালো থাকে।
মুখে কালো কালো ছোপ ছোপ পড়ে যায় অনেক সময়ে। অনেক কিছু ব্যবহার করেও সেই দাগ তোলা যায় না। নিমপাতা ব্যবহার করেছেন এর জন্য? এবার করে দেখুন।
পুদিনা পাতার রসের মধ্যে নিমপাতা নিয়ে সেটি বেটে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার স্নানের ২০ মিনিট আগে এটি মুখে মেখে রেখে দিন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে রোজ করতে পারেন। মুখ পরিষ্কারও হবে আর আস্তে আস্তে দাগ উঠেও যাবে।
আপনি ফর্সা হোন কি শ্যামবর্ণ সেটা আজকের দিনে বিশেষ কোনও চর্চার ব্যাপার নয়। কিন্তু আপনাকে উজ্জ্বল হতে হবে আর কিভাবে হবেন সেটা কিন্তু চর্চার ব্যাপার। আপনি যে গায়ের রঙ নিয়ে এসছেন সেই গায়ের রঙ বদলানো যাবে না, অন্তত বিজ্ঞান তাই বলে। কিন্তু আপনারা গায়ের রঙ যে উজ্জ্বলতা হারিয়েছে সেটা ফেরানো অবশ্যই সম্ভব। কী করবেন তার জন্য?
প্রথমে টম্যাটো খানিক সেদ্ধ করে নিন। এবার সেটা থেকে রস বের করে নিন। সেদ্ধ না করে এমনি চাইলেও রস বের করতে পারেন। এবার এই রস আইস কিউবের পাত্রে ঢেলে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। যখন মনে হবে একটু ফ্রেস লাগানোর দরকার মুখকে তখনই একটি কিউব নিয়ে মুখে ঘষুন। দেখবেন এই গরমে আরাম পাচ্ছেন আর মুখ সঙ্গে সঙ্গে ফ্রেস হয়ে যাচ্ছে। মুখ ধোয়ার পর উজ্জ্বলতার পার্থক্য আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে যদি এমন কিছু করা যায় যাতে সারাদিন মুখটা তরতাজা লাগে! এই ইচ্ছে নিশ্চয়ই আপনার অনেকবার হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা পরপরই মুখে কিছু না কিছু ব্যবহার করতে কারই বা ভালো লাগে। তাই সকালে উঠে এই কাজটি নিয়ম করে কয়েক দিন করে গেলেই সারাদিনের ফ্রেসনেস আপনার হাতের মুঠোয়।
কমলালেবুর শুকনো খোসা আপনি যে কোনও বড় শপিং মলে বা অনলাইনে আনাতে পারবেন। এর সঙ্গে কাঁচা দুধ মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখে লাগান বা যে অংশে রোদ লাগে সেখানে লাগান। ১৫ মিনিট মতো রেখে ধুয়ে ফেলুন হাল্কা গরম জলে। এটা সারাদিন ত্বকের তরতাজা ভাব বজায় রাখে আর একটা সুন্দর গন্ধ আসে গায়ে।
শুধু শীতকাল কেন, গরম, বর্ষা সব সময়ে আন্ডার আই ক্রিম ব্যবহার করুন। সারাবছর এই ক্রিম ব্যবহার করলে আপনার চোখের কোলে কালি পড়া, চামড়া কুঁচকে যাওয়া বা বলিরেখা এই সব কিছুই হবে না। চোখের তলার ত্বক শুকিয়ে যাবে না। শীতকালে আপনি যখন দেখেন আপনার চোখের তলায় কুঁচকে যাচ্ছে, সেটা হয় সারা বছর যত্ন না নেওয়ার জন্য। এবার সারা বছর যত্ন নিন, এখন থেকে শুরু করুন যত্ন, খুব ভালো থাকবেন এই শীতে।
গলানো সোনার মতো উজ্জ্বলতা চান? না না সোনা দিয়ে তার জন্য কিচ্ছু করতে হবে না। শুধু নিচের পদ্ধতিটি কয়েক দিন করে দেখুন,
আমরা বলব বাড়িতে কাঁচা হলুদ এনে বেটে নিলে সবচেয়ে ভালো। আপনি কাঁচা হলুদ না পেলে ভালো গুঁড়ো হলুদ আনুন। তার মধ্যে মধু মেশান আর মাখুন মুখে, হাতে। ২০ মিনিট রাখুন। তারপর হাল্কা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কয়েক সপ্তাহে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা আপনাকেই চমকে দেবে কথা দিচ্ছি। এটি কিন্তু আপনি রোজ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে হলুদ একবারে বেটে মিশ্রণটি ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।
প্রাকৃতিক ভাবে মুখ এক্সফোলিয়েট করতে চান? তাহলে আলু আর শশার হাত ধরতে পারেন। এই দু’টি উপকরণ খুব ভালো ভাবে আপনার মুখ থেকে মরা চামড়া দূর করে দেবে আর আপনি থাকবেন ঝকঝকে। পাশাপাশি যেহেতু এই দু’টি উপকরণ আপনি রাব করবেন তাই ওই অঞ্চলে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে, অক্সিজেনের মাত্রা বাড়বে।
প্রথমে মুখ পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এবার শশা বা আলুর টুকরো মুখে ঘষুন যতক্ষণ আপনার ইচ্ছে হয়। খানিক রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। সঙ্গে সঙ্গেই দেখে মনে হবে আপনার মুখ আগের থেকে বেশ ফ্রেস হয়েছে।
দুধ খুব ভালো করে মুখ পরিষ্কার করে দেয়। এতে হলুদ, মধু এছাড়াও অন্য অনেক কিছু হয়তো ব্যবহার করেছেন, কিন্তু কাঁচা দুধ নিজেই কাফি।
বাইরে থেকে এসে আগে মুখ পরিষ্কার জলে খানিক ধুয়ে নিন। এবার হাত কাঁচা দুধে চুবিয়ে মুখে লাগান। তারপর অল্প অল্প ঘষুন। মাঝে মাঝে মুখে টান আসলে আবার দুধ নিন। ১০ মিনিট করার পর ধুয়ে ফেলুন। সঙ্গে সঙ্গে ফল বুঝতে পারবেন। সব ময়লা অনায়াসে দূর হয়ে যাবে।
লেবুকে ন্যাচারাল ব্লিচ বলা হয়। খুব তাড়াতাড়ি মুখ থেকে জমা ময়লা বের করতে লেবুর জুড়ি মেলা ভার। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পুদিনা। এই গরমে পুদিনার ঠাণ্ডা ভাব আপনার মধ্যে আলাদাই ফ্রেসনেস আনবে।
তিনটি উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। আগে মুখ ধুয়ে তারপর এই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে হাল্কা হাতে ঘষুন। খানিক শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে এক দিন ছাড়া ছাড়া করুন। মুখের উজ্জ্বলতা অনেক গুণ বাড়বে।
কফি আর দুধ, কি শুনেই মনে হচ্ছে কোল্ড কফিটা হয়ে যাক! কিন্তু খাওয়া ছাড়াও এরা একসঙ্গে ভেলকি দেখাতে পারে আপনার রূপের ক্ষেত্রে। ব্যবহার করে নিজেই দেখে নিন। কফিও কিন্তু খুব ভালো কাজ দেয় ত্বক পরিষ্কার করতে বা এক্সফোলিয়েট করতে।
দু’টি উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। মুখে মেখে রেখে দিন এক ঘণ্টা মতো। তারপর হাল্কা গরম জল দিয়ে অল্প অল্প করে ঘষে তুলে ফেলুন। ইন্সট্যান্ট গ্লো দেখতে পাবেনই। সপ্তাহে একদিন অবশ্যই করুন।
সেই কবে থেকে আমাদের দেশে মুলতানি মাটির ব্যবহার শুরু হয়েছিল ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য। আজও কিন্তু আমরা এই সাধারণ একটি উপাদানের উপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করতে পারি। বিশেষ করে যাদের অয়েলি স্কিন তাদের জন্য কিন্তু মুলতানি মাটি খুব খুব উপকারী।
পদ্ধতি মুলতানি মাটি যে কোনও ভালো কসমেটিস্কের দোকানে পেয়ে যাবেন। এবার কয়েক চামচ মুলতানি মাটি জলে ভিজিয়ে রাখুন এক ঘণ্টা। তারপর ভালো করে মিশিয়ে মুখে মেখে ৩০ মিনিট রেখে দিন। ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিলেই এবার উজ্জ্বল সুন্দর ত্বক আপনার অপেক্ষায়। তবে সপ্তাহে দু’দিনের বেশি ব্যবহার করবেন না এটি, তাহলে আবার স্কিন ড্রাই হয়ে যেতে পারে।
আজকাল আমাদের জীবনে খুব চিন্তা। আর তার প্রভাব আমাদের চোখে মুখে। একটা ক্লান্ত ভাব, পরিশ্রান্ত ডালনেস আমাদের মুখে লেগে থাকে যা আমাদের সৌন্দর্যের পথে প্রধান বাধা। তাই চিন্তা কম তো করতেই হবে, তার সঙ্গে এই ক্লান্তি ভাব কাটাতে গোলাপ জল ব্যবহার করতে হবে।
তিনটি উপকরণ খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। মুখে একটি তুলোর বলের সাহায্যে এই মিশ্রণ লাগান আর ১৫ মিনিট মতো রেখে দিন। তারপর হাল্কা হাতে ঘষে তুলে ফেলুন ঠাণ্ডা জল দিয়ে। এটা আপনি রোজ করতে পারেন, বিশেষ করে বাইরে থেকে আসার পর। গোলাপের গন্ধ একটা আলাদাই মন ভালো করা ফ্রেসনেস দেবে।
খুবই গরম এখন, আর তার থেকেও বেশি সমস্যা চড়া রোদ আর প্যাচপ্যাচে ঘাম। কিন্তু গরম হোক কি ঘাম, তা বলে সাজা তো বন্ধ করা যায় না। তার ওপর আবার সামনে বিয়েবাড়ি থাকতে পারে।
যদিও এখন খুব বেশি লোক নিয়ে বিয়েবাড়ি করা যাবে না, তাও বিয়েবাড়ি যাওয়ার নিমন্ত্রণ পেলে যেতেই হবে আর গেলে জমকালো সাজ মাস্ট। কিন্তু যাদের তেলতেলে ত্বক তাদের উদ্দেশে বলব এই গরমে মেকআপ একটু কমই করুন, চড়া মেকআপ তো করবেনই না।
তেলতেলে স্কিনে এমনিতেই মেকআপ বসতে চায় না, তার ওপর আবার গরমে ঘামে মেকআপ গলে গিয়ে খুবই খারাপ দেখতে লাগতে পারে। তাই ম্যাট ফিনিসের স্মার্ট ঝকঝকে হাল্কা মেকআপ করুন এই গরমে। মন খারাপ করবেন না, জমিয়ে মেকআপ করার জন্য শীতকাল তো রইলই।
আপনার যদি ড্রাই স্কিন হয় তাহলে মেকআপ করা খুবই সহজ। সহজ কারণ তাড়াতাড়ি মেকআপ টেনে নেবে আর মেকআপ অনেক ক্ষণ স্থায়ী হবে। কিন্তু ড্রাই স্কিনে মেকআপ করার অন্য একটি সমস্যা আছে।
ড্রাই স্কিনে স্কিন পোর্স খুব একটা খোলা থাকে না, সেগুলিকে আগে তাই খুলতে হয়। মুখ আগে ভিজিয়ে নিলে গোলাপ জল দিয়ে তাহলে এই পোর্স সহজে খুলে যায়। তবেই মেকআপ তাড়াতাড়ি স্কিন নিতে পারে। এক্ষেত্রে তাই বিশেষ একটু যত্ন নেওয়া দরকার।
সবসময়ে হাত আর পায়ের নখ সময় নিয়ে পরিষ্কার করা উচিৎ। বলুন তো সত্যি করে, সপ্তাহে ক’দিন নখ ঘষে ঘষে পরিষ্কার করেন? স্নানের সময়টুকু বাড়ান, নিজেকে সময় দিন।
সপ্তাহে অন্তত তিন দিন হাতের আর পায়ের নখ ভালো করে ঘষে পরিষ্কার করুন। পায়ের নখ তো খুবই ভালো করে কারণ পায়ের নখই সবচেয়ে বেশি রাস্তার ময়ালার সংস্পর্শে যায়। ভালো ব্রাশ দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করবেন নখ, এতে হাইজিন বজায় থাকবে আর নেল পালিশ পরতেও ভালো লাগবে।
হাতের নখের ক্ষেত্রে বলব, মাসে একবার অন্তত মেনিকিওর করান। খুব বেশি খরচ করে যে করাতে হবে রা কিন্তু নয়। তবে করান অবশ্যই। নখ কিন্তু আপনার সৌন্দর্যের অন্যতম সঙ্গী, সেটা ভাঙা নখ, নখকুনি এই সব জ্বালা যখন আপনি ভোগ করেন তখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন। নখের ওপর হলুদ দাগ বা ছোপ কিন্তু এর থেকে উঠে যাবে আর নখ সুন্দর ঝকঝকে হবে।
২১. মেনিকিওর করার মতো পেডিকিওরও কিন্তু করা উচিৎ মাসে একবার। পা আমাদের সারাদিনে সবচেয়ে বেশি ক্লান্ত হওয়া অঙ্গ, সবচেয়ে অবহেলিতও বটে। পায়ের, পায়ের নখের যত্ন কিন্তু তাই নিতেই হবে।
২২. পায়ে জুতো ব্যবহার করার সময়ে মনে রাখবেন যে জুতোয় আপনি আরাম বোধ করছেন সেই জুতোই ব্যবহার করুন। জুতো রোদে দিন এক দিন অন্তর। আর রাতে এসে আঙুলের ফাঁকে পাউডার দিন, পা ভালো থাকবে।
২৩. পায়ের যত্নের ক্ষেত্রে আরেকটি কথা মনে রাখবেন। রাতে গোড়ালিতে ক্রিম অবশ্যই মাখবেন আর মোজা পরবেন। এতে পা নরম আর সুন্দর থাকবে।
২৪. পায়ে মোজা পরার কথা আগেই বলেছি, কিন্তু কীরকম মোজা পরবেন! নাইলনের মোজা একদম পরবেন না, এতে পায়ের ভিতর হাওয়া চলাচল করবে না আর পা ঘেমে যাবে, দুর্গন্ধ হবে। নরম সুতির মোজা পড়ুন। তাতে পায়ে হাওয়া খেলবে, গন্ধও হবে না আর পা সরাসরি ময়লার সংস্পর্শে আসবে না।
সারাদিনের পর রাতে হাল্কা হাতে একটু যত্ন কিন্তু আপনার ত্বককে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাবে। কিছুই তেমন করার কথা বলছি না। দোকান থেকে ভালো ময়েশ্চারাইজার আনুন। শোবার আগে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর অল্প একটু ময়েশ্চারাইজার মুখে হাতে মেখে নিন আর শুয়ে পড়ুন। এইটুকুই যথেষ্ট, আপনি রাতে রিলাক্স হয়ে ঘুমোতে পারবেন আর আপনার ত্বকও সারাদিনের ক্লান্তি থেকে মুক্তি পাবে।
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময়ে কখনও কোনও তেলতেলে ক্রিম ব্যবহার করবেন না। রাতে আমাদের ত্বকের ভালো করে নিঃশ্বাস নেওয়ার কথা। তেলতেলে চটচটে ক্রিম ত্বকের পোর্স বন্ধ করে দেয়। তাই এমন ক্রিম ব্যবহার করুন যা হাল্কা, চটচটে নয়।
চুল একটু আধটু রঙ তো আমরা করেই থাকি। কিন্তু সেটা করি চটজলদি বাজারের ডাই থেকে। এমনিতেই যে কোনও ওই বাজারের ডাই ব্যবহার করা ঠিক নয়। ওতে যে রাসায়নিক পদার্থ থাকে তা চুলের জন্য ভালো নয়। কিন্তু যদি একান্তই আপনাকে ওই ডাই ব্যবহার করতে হয়, তাহলে অ্যামোনিয়া মুক্ত ডাই ব্যবহার করুন। তাতে চুল অন্তত খুব ক্ষতির সম্মুখীন হবে না।
অনেক কিছু মেখেছেন, অনেক ক্রিম ব্যবহার করেছেন, কিন্তু ভালো ফল পাচ্ছেন না, তাই তো? তা ফল পেটে গেলে স্কিনের ভিতরে ওই ক্রিমের ঢোকা দরকার। সেটা হয় তো? আসলে অনেক সময়েই আমাদের ত্বকের পোর্স বন্ধ থাকে।
তাই ক্রিম, লোশন কোনও কিছুই কাজ করে না। আগে দরকার স্কিনের পোর্স খোলা। তার জন্য গরম জলের ভাপ নিতে পারেন। এটি একটি পুরনো কিন্তু খুব কার্যকরী উপায়। করে দেখতে পারেন, ফল পাবেন।
২৯. ব্যায়াম করার সময়ে অবশ্যই মুখে কোনও মেকআপ করবেন না। ওই সময়ে আমাদের ত্বকের উচিৎ ভালো করে নিঃশ্বাস নেওয়া। মেকআপ থাকলে ত্বকের পোর্স খুলবে না, ত্বক ভালো থাকবে না।
৩০. মুখ পরিষ্কার করার জন্য ফেস ওয়াস ব্যবহার তো করেন, কিন্তু জানেন কী কিরকম ফেস ওয়াস ব্যবহার করা উচিৎ? ফেস ওয়াস ব্যবহার করতে হয় হাল্কা, যাতে ত্বকের ক্ষতি না হয়। এই গরমে পারলে নিম দেওয়া ফেস ওয়াশ ব্যবহার করুন। এতে তেলতেলে ভাব কমবে, ব্রণ হওয়া কমবে। সার্বিক ভাবে মুখ পরিষ্কার থাকবে।
৩১. মুখে কখনই সাবান ব্যবহার করবেন না। সাবানে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা মুখের জন্য একদম ভালো নয়। এতে ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক হয়ে যায়। তাই সবও সময়ে মাইল্ড ফেস ওয়াস ব্যবহার করুন।
৩২. গরমে অবশ্যই হাল্কা সুতির কাপড় পরুন। কাপড়ের রঙ হতে হবে হাল্কা, যা রোদ প্রতিফলিত করে দেবে। কালো তো একেবারেই পরবেন না।
৩৩. ঠাণ্ডার সময়ে মুখে একটা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে রাখবেন। এর ফলে ত্বক সরাসরি ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসবে না। ফলে মুখের জলীয় ভাব খুব সহজে কমে যাবে না, মুখ শুকিয়ে যাবে না।
৩৪. ঠাণ্ডার সময়ে ফ্যাশন করতে পারব না বলে গরম কাপড় পরবো না এসব কিন্তু অবশ্যই করবেন না। সারা শরীর ঢাকা থাকবে এমন পোশাক পরুন, ঠাণ্ডার প্রকোপ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলুন।
৩৫. গরমে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য কিছু জিনিস আপনাকে সঙ্গে রাখতেই হবে। বাইরে যাওয়ার সময়ে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করুন, স্টোল ব্যবহার করুন। ছাতা মাথায় অবশ্যই দিতে হবে, রোদ সেভাবে মাথায় বা মুখে লাগানো যাবে না।
৩৬. গরম হোক কি শীত, বাইরে যাওয়ার সময়ে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। যদি পারেন সানস্ক্রিন কোনও লোশন বা ক্রিমের সঙ্গে মিশিয়ে মাখুন। এটি আলাদা ভাবে আপনার ত্বকের যত্ন নেবে আর ত্বককে সরাসরি রোদের থেকে বাঁচাবে। তাই ট্যান পড়া, ত্বক কালো হয়ে যাওয়া সব বন্ধ হয়ে যাবে।
৩৭. গরম কালের জন্য বিশেষ করে বলার, মুখে একদম কিন্তু ঘাম বসতে দেওয়া যাবে না। একটি পাতলা রুমাল দিয়ে মুখ মুছে নিন। তার মানে আবার ঘষবেন না মুখ, থুপে থুপে মুছুন মুখ। আর মাঝে মাঝে মুখ ধুয়ে নিন।
৩৮. একসঙ্গে ফল আর কাঁচা সবজি খাবেন না। এটি খাবার হজম হতে সমস্যা করতে পারে।
৩৯. আমাদের শরীর অন্যতম নরম অঙ্গ কী জানেন? আমাদের ঠোঁট। এর যত্ন তাই অবশ্যই নিতে হবে। গোলাপি সুন্দর ঠোঁট তো সুন্দর হওয়ার অন্যতম শর্ত। তাই ঠোঁট ভালো রাখতে ভালো লিপ কেয়ার জেল বা লিপস্টিক ব্যবহার করুন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে ঠোঁটে ক্রিম দিন অল্প, ঠোঁট নরম থাকবে।
৪০. চোখে কাজল পরার সময়ে দেখে নেবেন চোখের ভিতর যেন কাজল না যায়, এতে চোখের ক্ষতি হতে পারে। আর সব সময়ে বাইরে থেকে এসে চোখের কাজল মুখে নিতে হবে, নয়তো চোখ ভালো থাকবে না, দাগ পড়ে যেতে পারে।
৪১. আপনি যখন কোনও ডিও ব্যবহার করবেন তখন ভালো করে দেখে নেবেন তা যেন আপনার স্কিনে দাগ না ফেলে।
৪২. পারফিউম ব্যবহার করবেন সবসময়ে হাল্কা গন্ধের। স্ট্রং গন্ধ অনেক সময়ে মাথা ধরিয়ে দেয়। আর এই মাথা ধরে থাকা কিন্তু অনেক ক্ষণ অবধি থাকে।
৪৩. কান সুন্দর করতে রকমারি কানের দুল তো পরতেই হবে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন। কানের দুল যেন কানের সাপেক্ষে এতো বড় না হয় যে কানে ব্যথা হয়। অনেকে ভাবেন বড় কানের দুল পরবেন, তা পরতেই পারেন। কিন্তু তা ঠিক ভাবে ক্যারিও করতে হবে। নইলে সব সাজ মাটি।
এতো রকম ঘরোয়া টোটকার কথা বললাম। কিন্তু এর সঙ্গে সপ্তাহে একদিন অন্তত কোনও ফেসিয়াল সিরাম ব্যবহার করা উচিৎ। ফেসিয়াল সিরাম ব্যবহার করলে ত্বকে ভিটামিন বি আর সি’র সঞ্চালন ভালো হয়। এতে স্কিনের সার্বিক উন্নতি হয়, স্কিন ভালো থাকে।
তাহলে এই রইল আপনাদের জন্য এ টু জেড ওয়ান স্টপ আর্টিকেল। আশা করি অন্য কোথাও আর আপনাদের যেতে হবে না কোনও সমস্যার জন্য। এই একটি আর্টিকেল আলাদা ভাবে সেভ করে রাখুন। যে কোনও ত্বকের সমস্যায় একবার শুধু খুলে পড়ে নেওয়ার অপেক্ষা। তারপর সেই সমস্যা – চিচিং ফাঁক।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…
View Comments
চোখের নিচের কালোদাগ,ভ্রু ঘন করা,এবং ঠোঁট গোলাপি করার ঘরোয়া উপায় এর কিছু টিপস দিলে উপকৃত হবো,দয়াকরে উপায়টি জানাবেন??
চোখের নিচে কালি দূর করার উপায় জানতে এক লিঙ্কে চেক করুনচোখের নিচে কালি দূর করার উপায় জানতে এক লিঙ্কে চেক করুন