ষষ্ঠী থেকে নবমী, প্রত্যেকদিনই নিত্যনতুন জামাকাপড়ের সঙ্গে গর্জাস অ্যান্ড গ্ল্যামারাস মেকআপ মাস্ট। কিন্তু মেকআপ করতে ইচ্ছে হলেও অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না, কীভাবে মেকআপ করতে হবে, বা কীরকম মেকআপে তাঁদের ভাল লাগবে। তাঁদের জন্যেই আজকের লেখায় রইল পুজোয় সপ্তমীর মেকআপ লুকের স্টেপ বাই স্টেপ গাইডেন্স।
সপ্তমীর মেকআপ সাধারণত খুব একটা ভারি হয় না। সপ্তমীতে পুজো সবে মাত্র শুরু হয়, ফলে এইদিনে আপনি হালকা একটি পোশাক বাছুন। তার সঙ্গে মেকআপটিও হালকা করে করুন।
যতই জমিয়ে মেকআপ করুন না কেন, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলে কিন্তু গোটা বিষয়টাই মাটি হয়ে যাবে, আপনার মুখটাও ড্রাই লাগবে। এর জন্যে ‘লরিয়েল’-এর ক্রিস্টাল রিভাইটালিফট মাইক্রো এসেন্স ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। যেহেতু সপ্তমীতে ভারি মেকআপ করছেন না, ফলে এইদিনের বেস মেকআপটিও হালকা হবে, তাই এই লাইট ময়েশ্চারাইজারটিই আপনার জন্যে পারফেক্ট হবে।
এরপর গোটা মুখে একটি প্রাইমার লাগিয়ে দিন। এর জন্যে ‘নাইকা’-র প্রেপ মি আপ প্রাইমার ব্যবহার করতে পারেন। আপনার মুখে যদি কোনও ওপেন পোরস থেকে থাকে, তাহলে এই প্রাইমার সেগুলি ঢেকে দিতে সাহায্য করবে। এছাড়া আপনার ত্বকে গর্ত, উঁচু-নিচু ভাব থাকলে মুখকে একটা ইভেন টোন দেবে, যার ফলে পরে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করা সহজ হবে।
টি-জোন অনেকেরই অয়েলি হয়। তাই টি-জোনে যদি বিশেষ নজর না দেন, তাহলে আপনার মেকআপ ঘেঁটে গিয়ে বিচ্ছিরি দেখাতে পারে। এক্ষেত্রে ‘মেবিলিন’-এর সুপার ফ্রেশ কম্প্যাক্ট ব্যবহার করুন। একটি নরম ব্রাশ দিয়ে কম্প্যাক্টটি নাকে, চিবুকে, গালে, কপালে ভাল করে লাগিয়ে হালকা করে স্কিন টোনের সঙ্গে ব্লেন্ড করে দিন। তবে যদি আপনার টি-জোন অয়েলি না হয়, তাহলে কম্প্যাক্ট ব্যবহার না করলেও চলবে।
এরপর একটি ফ্ল্যাট ফাউন্ডেশন ব্রাশের সাহায্যে সমগ্র মুখে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন। আপনি ‘বায়োটিক’ ন্যাচারাল মেকআপ ফাউন্ডেশন (স্যান্ড) ব্যবহার করতে পারেন। মুখের স্কিন টোনের সঙ্গে খাপ খায়, এমন শেডের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন। এরপর ভাল করে মুখের স্কিন টোনের সঙ্গে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করে নিন। ফাউন্ডেশন সমানভাবে ত্বকের সঙ্গে ব্লেন্ড না হলে কিন্তু খুব বাজে দেখতে লাগে। তবে খেয়াল রাখবেন, এই ফাউন্ডেশনটি কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। ফলে তাড়াতাড়ি ব্লেন্ড করে নেবেন। আর হ্যাঁ, ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে সেটি গলাতেও নিশ্চিন্তে অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
মেকআপের সময় কনসিলার মাস্ট। এক্ষেত্রে আপনারা ‘মেবিলাইন’-এর ফিট মি কনসিলার-২৫ ব্যবহার করুন। এই কনসিলারটি হালকা, ফলে আপনার সপ্তমীর হালকা মেকআপের সঙ্গে সুন্দরভাবে খাপ খাইয়ে যাবে। প্রথমে চোখের কোণে, নাকে, চিবুকে অল্প করে কনসিলার লাগিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। তবে যদি বেশি কভারেজ চান, তাহলে কনসিলার লাগিয়ে দু’মিনিট অপেক্ষা করার পর ব্লেন্ড করে নেবেন। এরপর পাওডার ব্রাশের সাহায্যে কম্প্যাক্ট ভাল করে গোটা মুখে লাগিয়ে নিন। এর ফলে গোটা মুখে খুব সুন্দর একটি ইভেন টোন আসবে।
ভুরু যদি খুব পাতলা হয়ে থাকে, বা ভুরু ঘন ও ডার্ক করতে চান, তাহলে ‘মিস ক্লেয়ার’ আইব্রো পেনসিল (ডার্ক ব্রাউন)-এর সাহায্যে ভুরুটি ঘন করে এঁকে নিন।
পুজোয় মেকআপ যা-ই হোক না কেন, চোখকে প্রমিনেন্ট করে তোলা কিন্তু খুব জরুরি। তাই আই মেকআপের দিকে আমরা বিশেষ নজর দেব। ‘সুইস বিউটি’ ৩২ কালার হলিউড প্যালেটে-এর থেকে আপনার স্কিন টোনের সঙ্গে খাপ খায়, এমন একটি শেড বেছে চোখের উপরের পাতায় আঙুলের সাহায্যে হালকা করে লাগিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। যেহেতু সপ্তমীতে আমরা হালকা মেকআপ করছি, ফলে বেশি ডার্ক কোনও টোন না ব্যবহার করাই ভাল। এবার একটি অ্যাঙ্গুলার ব্রাশের সাহায্যে হালকা গোলাপি বা আপনার পছন্দের কোনও শেড নিয়ে আপার ল্যাশ লাইনে লাগান।
লোয়ার ল্যাশ লাইনেও অল্প করে কালার লাগাতে পারেন। এরপর আপার ল্যাশ লাইনের জাস্ট উপরে ‘ব্লু হেভেন’-এর স্কেচ আইলাইনার দিয়ে চোখের সাইডগুলি ভাল করে এঁকে নিন। তারপর ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াইল্ড’-এর মেগা লেংথ মাসকারার আইল্যাশে অ্যাপ্লাই করুন। এবার যদি আপনার ফলস আইল্যাশ লাগানোর ইচ্ছে হয়, তবে সেটি লাগাতে পারেন। মেকআপের শেষে চোখের ইনার কর্নারকেও হাইলাইট করে নিতে ভুলবেন না। এতে চোখ খুব প্রমিনেন্ট ও সুন্দর লাগে।
এবার ‘সুগার’ মিনি ব্রোঞ্জার-এর সাহায্যে গালে ও নাকে হালকা করে লাগিয়ে নিন। এটি আপনার মুখকে এবং নাককে একটি শার্প লুক দেবে। যাদের মুখ গোল বলে মোটা লাগে বলে যাদের কমপ্লেক্স রয়েছে, তাঁরা এটি ব্যবহার করতে পারেন। মেকআপের শেষ পর্যায়ে ‘ওয়েট অ্যান্ড ওয়াইল্ড’-এর কালার আইকন ব্লাশ ব্যবহার করুন।
এই ব্লাশটি খানিক পিগমেন্টেড। ভারতীয় স্কিন টোনের সঙ্গেও এটি খুব ভালভাবে যায়। এবার ‘নিকা’ কে সেটিং স্প্রে-র সাহায্যে গোটা মুখে স্প্রে করে মেকআপ সেট করে নিন। খেয়াল রাখবেন, স্প্রে যেন চোখে না যায়। এটি আপনার মেকআপ সেট করে রাখবে, ফলে গরমে ঘামলেও চট করে মেকআপ গলে যাবে না। ইচ্ছে হলে এবার ‘সুইস বিউটি’ বেকড ব্লাশারের সাহায্যে গাল, চিবুক ও নাক হাইলাইট করে নিন। এতে আপনার মুখ শার্প দেখাবে।
এত সুন্দর মেকআপের পর ঠোঁটে দারুণ একটি লিপস্টিক না অ্যাপ্লাই করলে কি হয়? তাই ঠোঁটকে রাঙিয়ে তুলুন ‘ল্যাকমে’ এনরিচ ম্যাট লিপস্টিক। এছাড়া নিজের পোশাক ও স্কিন টোনের সঙ্গে ম্যাচ করে যে-কোনও ম্যাট শেড আপনি বেছে নিতে পারেন।
তাহলে এবার আর মেকআপে ভয় কীসের? আমাদের স্টেপ বাই স্টেপ গাইডেন্স মেনে খুব সহজেই আপনিও এবার পুজোয় হয়ে উঠুন অপরূপা। দেখবেন, প্যান্ডেলে-প্যান্ডেলে সবার নজর আপনার দিকেই থাকছে!
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…