শুচিবায়ু বা ‘অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার’ বা সংক্ষেপে যাকে বলা হয় ওসিডি -এই রোগে দেখা যায় যে, রোগী একই কাজ বারবার করে করতে থাকে। যেমন ধরুন বারবার হাত ধোয়া, একই কাজ বারবার করা, বা ধরুন মুখ কোনও জিনিস একটি নির্দিষ্টবার করে করা, যেমন মুখ তিন’বার করে ধোয়া, টেবিল দু’বার করে মোছা ইত্যাদি।
এই রোগে সাধারণত দুটি কম্পোনেন্ট থাকে, একটি হল অবসেশন, আর অপরটি হল কম্পালশন। অবসেশন হল তাঁর চিন্তাভাবনা, যে চিন্তাভাবনা একরকমের মানসিক উদ্বেগ এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করে, এবং চাইলেও এই চিন্তাটা মাথা থেকে বের করতে পারেন না ওসিডি আক্রান্ত মানুষ। কিন্তু দেখা যায় যে, রোগীর মধ্যে একধরণের অ্যাকটিভ এফোর্ট থাকে, যা ওই চিন্তাভাবনাগুলিকে সরিয়ে ফেলতে চায়, কিন্তু পারে না।
এক্ষেত্রে রোগী একটা চক্রব্যুহের মধ্যে জড়িয়ে পড়ে, এবং একই কাজ বার বার করে করতে থাকে। যেমন অনেকে তালায় চাবি দিয়ে বারবার দেখেন ঠিকমতো লাগল কি না, গ্যাসের নব ঠিকমতো লাগলো কি না, হাতটা ঠিকমতো ধোয়া হল কি না ইত্যাদি। আবার কম্পালসিভ অ্যাক্টে অনেকের মনে একটা পাপবোধ কাজ করতে পারে, বিশেষত ধর্মীয় ক্ষেত্রে, যেমন ধরুন কোনও কাজের জন্য ঈশ্বরের কাছে বার বার ক্ষমা চাওয়া।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যদি এমনটা টানা দুই সপ্তাহের বেশি ধরে চলতে থাকে, এবং একে করে যদি কাজকর্ম এবং পড়াশোনা এবং সামগ্রিকভাবে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে তাহলে বুঝবেন আপনি ওসিডি আক্রান্ত।
অন্যান্য মানসিক রোগের মতো এটিও কিন্তু মাল্টি ফ্যাক্টরিয়াল, কারণ এটি রোগীর বায়োলজিক্যাল, সোশ্যাল এবং সাইকোলজিক্যাল কারণের সংমিশ্রণে হয়ে থাকে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, এক্ষেত্রে বায়োলজিক্যাল কারণ বা রোগীর মনের যে অন্তর্গঠন, সেটাই এর জন্য মূলত দায়ি।
এই রোগটি কিন্তু নারী-পুরুষ যেকোনও মানুষের যেকোনও বয়সে হতে পারে, এমনকি যেকোনও আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রের মানুষের হতে পারে, তবে বিশেষত এটি বয়সন্ধিকালেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা দেয়।
অনেকসময় ওসিডি আক্রান্ত ব্যক্তিরা বাড়ির লোকের কাছে খুবই ঘৃণার পাত্র হয়ে ওঠেন, যার অন্যতম কারণ হল, যিনি ওসিডি আক্রান্ত তাঁর দ্বারা বাকি অন্যান্য মানুষের সময় নষ্ট হয়ে থাকে, যেমন অনেকক্ষণ ধরে বাথরুম আটকে রাখা, বা একই কাজ বার বার করা এবং অন্যকে দিয়ে করানোর ফলে স্বাভাবিকভাবেই পাশের মানুষগুলিকর মধ্যে রাগ হয়, এবং তাঁরা ভাবেন রোগী হয়তো ইচ্ছা করেই এমনটা করেন এবং চাইলেই এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করতে পারা যায়। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। রোগী নিজে থেকে চাইলেই একে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। তাই এই রোগের চিকিৎসার প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা এই রোগের ক্ষেত্রে রোগীকে অ্যান্টি অবসেশনাল ড্রাগ এবং সঙ্গে কিছু বিহেভিয়র থেরাপি করে থাকেন। রোগীরা যদি ঠিকমতো ওষুধ খান এবং সাইকিয়াট্রিস্টের পরামর্শ যদি ঠিকমতো করে মেনে চলেন তাহলে এই শুচিবায়ুগ্রস্থতার কারণে রোগীর যে জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটছিল, তা অনেকখানি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পাশাপাশি যেসব চিন্তাভাবনা থেকে রোগীর উদ্বেগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এছাড়া এই রোগ নিরাময়ে বর্তমানে ‘সেরাটোনিন রিআপটেক ইনহিবিটার’ গোত্রের কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
মনে রাখতে হবে এটি একটি সম্পূর্ণ চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষা। ওসিডি কিন্তু একটা ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী রোগ। এই রোগে যে জিনিসের প্রতি রোগী এক্সপোজ হতে চাইছে না, এড়িয়ে চলছে, যেমন কোনওকিছু ময়লা বা নোংরা, এই পদ্ধতিতে রোগীকে সেই জিনিসের প্রতি এক্সপোজ করা শেখানো হয়। আসলে বিষয়টি এই পরিসরে বলে বোঝানো সম্ভব নয়, এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াটা বিশেষভাবে প্রয়োজন। তবে থেরাপি এবং ওষুধ একসঙ্গে নিলে কার্যকরী ফলাফল পেতে পারেন।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…