পেটের চর্বি ঝরাতে সকালে উঠে এই তিনটির মধ্যে যেকোনো একটি কাজ করুন
কথিত আছে যে সব ভালো তার, শেষ ভালো যার। কিন্তু উলটপুরাণই এখন যেন নতুন ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকাল থেকেই দিন শুরুর রোজনামচা সঠিক ভাবে না মেনে চললে আর যাইহোক ভুঁড়ি কমানো ঝক্কি হয়ে ওঠে।
কর্মক্ষেত্রে এক জায়গায় বসে কাজ করার বাধ্যবাধকতা হোক কি অনিয়মের ডায়েট বা অলসতা পেটের মেদ একদিকে আমাদের সক্রিয়তায় বাধা তো দেয়ই, সাথে আমাদের শেপ ও বেমানান করে তোলে। যার ফলে সৌন্দর্য এবং সন্তান ধারণ সহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আপনাদের কাছে মাত্র তিনটি পথ বাতলে দিচ্ছি যার যেকোনো একটা ফলো করলেই আপনি পাবেন স্লীম ও ট্রিম সুঠাম চেহারা।
১) খাবার বেছে নিন:
বেলি ফ্যাট কিন্তু সিনেমায় দেখা স্টারদের মত করে চট করে ম্যাজিক এর মত কমিয়ে ফেলা সম্ভব নয় তাই খাবারে রাশ টানা ও নিয়ম সকালের শুরু থেকেই মেনে চলা উচিত।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নিচের বিকল্প গুলির মধ্যে যেকোনো একটি পান করুন।
খালি পেটে এক গ্লাস উষ্ণ গরম জলের সাথে ২ চামচ লেবুর রস ও হাফ চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। লেবুতে থাকা পলিফেনল ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করে।অন্যদিকে এটি শরীরের অতিরিক্ত টক্সিন বের করে।
ঘুম থেকে উঠেই ২-৩ টি রসুন এর কোয়া চিবিয়ে খেতে পারেন। রসুন এন্টি অক্সিডেন্ট এ পরিপূর্ণ তাই শরীরে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে এটি চর্বি গলিয়ে ফেলে ও ট্রাই গ্লিসারয়েড হ্রাস করে।
দিনের শুরুটা কিন্তু এক কাপ গ্রিন টি দিয়ে করতেই পারেন। গ্রিন টি এর সবুজে থাকা কোরজেনিক অ্যাসিড মেটাবলিজম বুস্ট করে। সান দিয়েগো এর এক গবেষনা অনুযায়ী বছরে ব্যায়ম ছাড়াই কমানো গেছে ১৫ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন।তবেই ভেবে দেখুন।
তবে যাই খান না কেন সকালে উঠে ২ গ্লাস জল পান করা কিন্তু মাস্ট। সারারাতে হজমের ফলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। সেই অভ্যন্তরে জলের যোগান দেবা দরকার। নইলে নুন এর সাথে ফ্যাট সঞ্চয় হবার সুযোগ তৈরী হয়।
২) সকাল থেকেই অভ্যেস নিয়ন্ত্রণ করুন:
মানুষ যে অভ্যাস এর দাস একথা তো শুনেই থাকবেন তো চর্বি ও তার বাইরে কোথায়? ক্যালরি যে পরিমানে গ্রহন করবেন তার সঠিক হারে বেরিয়ে না গেলেই যত গোল বাধে।
যারা অফিস জব বা ব্যান্ক ইত্যাদিতে ডেস্ক জবে আছেন তাদের কায়িক পরিশ্রম খুব একটা হয় না। তারা সকালে উঠে হাঁটাহাঁটি করতেই পারেন। কষ্ট হলেও অভ্যেস বানিয়ে ফেলুন।
মসলাযুক্ত খাবার, প্রসেসড ফুড, সফ্ট ড্রিঙ্কস, এলকোহল ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।প্রাতঃরাশ থেকেই খাবার এর পরিমান অল্প অল্প ভাগ করে নিয়ে রুটিন করে বারবার খান।
সকালের নাস্তায় পাউরুটি ও ড্রেসিংযুক্ত স্যালাদ বাদ দিন। প্রোটিন এর পরিমান বাড়ান ও দরকারে নিজের খাবার নিজেই বানিয়ে নিন। স্ট্রেস ফ্রি হন ও মনের আনন্দে ঘরের কাজে অংশগ্রহন করুন।
ঘুম থেকে উঠে অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও বা বই ট্রাই করে দেখতে পারেন।
গভীর রাতে ঘুমনোর অভ্যেস আগেই ত্যাগ করুন ও ঘুমনোর কম করে ২ ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে ফেলুন। এতে পরিপাক ক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে আর সকালে উঠতে পারবেন যার ফলে শরীর বেশি কার্যক্ষম থাকবে।
সূর্যাস্তের পরে ফাইবার জাতীয় ফল খাবার অভ্যাস করতে পারেন। সবসময় সোজা হয়ে দাঁড়ান বা বসুন কুজো হয়ে থাকলে ভুড়ি এমনি বাড়ে।
৩) সুবিধে মত ব্যায়াম:
একটি সমতল জায়গা নির্বাচন করে মেরুদন্ড সোজা রেখে বসে পড়ুন। শরীরের পস্চার হবে ঋজু। এবার পা দুটো সামনের দিকে সোজা মেলে দিন এবং লক্ষ্য রাখুন যেন পা দুটোর মধ্যে দুরত্ব বজায় থাকে।
শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। ধীরে ধীরে গতি বাড়ান ও বেশ কয়েকবার রিপিট করুন। হাত দুটো শরীরের দুপাশে নিয়ে গিয়ে স্ট্রেচ করে উপরে তুলুন ও দুদিকে টানটানভাবে তুলে রাখুন।
এরপর কোমরকে ভরকেন্দ্র করে দুটো হাত পর্যায়ক্রমে একবার ক্লকওয়াইজ ও একবার এন্টি ক্লকওয়াইজ দিকে ঝুঁকে ঘুরুন। হাত যেন বেন্ড না হয় এবং মাথার পজিশন যাতে ঠিক থাকে সেটা নজর অবশ্যি করবেন। এই প্রসেসটা মোটামুটি একমিনিট মত জারি রাখুন।
এবার ডানহাত দিয়ে বাম পা এর বুড়োআঙ্গুল এর উপরিভাগ ছোঁয়ার চেষ্টা করুন।যতটা পারেন পেটের উপর চাপ দিয়ে সামনে ঝুকুন। এরপর একইভাবে বাম হাত দিয়ে ডান পা এর বুড়ো আঙ্গুল ছোঁয়ার চেষ্টা করুন। এতে পেটের মাসল কার্যকরী হবে ও মেদ কমাতে সাহায্য করবে। এই পদ্ধতি কমপক্ষে ২-৩ মিনিট রিপিট করুন।
বিকল্প ব্যায়াম:
যাদের এই ব্যায়ামটিতে সমস্যা হবে তারা মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে কনুই ও পায়ের আঙ্গুল এর উপর ভর দিয়ে সমগ্র শরীর শুন্যে রেখে প্লাঙ্ক অনুশীলন করতে পারেন। এছাড়াও ক্রান্চ ও খুব ফলদায়ী। এগুলো হিপ,ব্যাক এবং গ্লুটস এর পেশী এর উপরেও প্রভাব ফেলে যার ফলে চর্বি ঝেড়ে ফেলে আপাদমস্তক ছিপছিপে চেহারা পাওয়া সহজ হয়ে যায়।