অনেক টালবাহানার পর শুরু হয়েছে এই বছরের রথযাত্রা। প্রত্যেক বছর কাতারে কাতারে ভক্ত যান জগন্নাথদেবের রথের রশি একবার টানবেন বলে। আমরা সবাই বিশ্বাস করি জীবনে একবার অন্তত রথের রশি ধরে টানা উচিত। তাই তো প্রত্যেক বার রথের দিন এতো ভিড় হয় পুরীতে।
কিন্তু কেন আমরা মনে করি রথের দিন পুরীর রথের রশি অন্তত জীবনে একবার টানা অবশ্যই কর্তব্য? আসুন সেই বিষয়ে আজ আলোকপাত করি।
সেই কবে থেকে মানুষ ভেবে এসেছে কীভাবে এই জন্ম-মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া যায়। জন্ম না হলেই এই দুঃখ, শোক আর পেতে হবে না। তাই তো আমাদের শাস্ত্রে চতুর্বর্গ হিসেবে মোক্ষকে রাখা হয়েছে। শাস্ত্রে বলে, জগন্নাথদেবের রথ টানলে নাকি এই মোক্ষ সহজেই লাভ করা যায়। আর নাকি পুনর্জন্ম হয় না। জগন্নাথের রথের রশির নাম নাকি বাসুকি। অনেকে এই মোক্ষলাভের জন্য রথের চাকার তলায় প্রাণ বিসর্জন দিতে চান।
তবে এসবই শাস্ত্রের কথা, আজকের সময়ে দাড়িয়ে এসব অনেকটাই মানা সম্ভব নয়। আর এরকম ভাবে ভাবা উচিতও নয়।
আমরা জেনে বা না জেনে অনেক পাপ করে থাকি। কিন্তু পাপের থেকে মুক্তিও প্রয়োজন। তাই কখনও গঙ্গাস্নান বা কখনও কিছু দান, এই সবের মাধ্যমে আমাদের পাপক্ষয়ের নানা উপায় বলা আছে শাস্ত্রে।
এর মধ্যে অন্যতম পাপক্ষয়ের উপায় হল রথের দিন পুরীর জগন্নাথের রথের রশি টানা। কপিল সংহিতায় আছে, “গুণ্ডিচাখ্যং মহাযাত্রা যে পশ্যন্তি মুদনিতাঃ/ সর্বপাপ বিনির্মুক্তা তে যান্তি ভুবন মম”। অর্থাৎ রথযাত্রা দেখলে সব পাপ দূর হয়ে যায়। তাই তো দূর দূর থেকে এতো ভক্ত আসেন পুরীর রথ টানতে।
আমরা তো আজকের দিনে সকলেই প্রায় নানা রোগে জর্জরিত। শাস্ত্রে বলছে, অনেক কঠিন রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় যদি রথের দিন জগন্নাথের রথ টানা যায় পুরী এসে। তাই অনেক ভক্ত রথের দিন এসে শুধু রথের রশিই টানেন না। সেই রশির কিছু অংশ ছিঁড়ে নিয়ে যান।
সেই অংশ নিজের কাছে রাখেন বা মাদুলি করে পরেন। এতে নাকি রোগ, বিপদ এই সবকিছুর আশঙ্কা অনেক কমে। দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক কমে যায়। এর পাশাপাশি যদি কোনও ব্যক্তির রাতে দুঃস্বপ্ন দেখার প্রবণতা থাকে তাহলে সেটিও প্রায় আর থাকে না।
আমরা জীবনে সকলেই সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি চাই। জীবনে চাই উন্নতি আর প্রতিপত্তি। বামদেব সংহিতায় বলছে, রথের দিন পুরীতে রথের রশি টানলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল লাভ হয়। অশ্বমেধ যজ্ঞ একজন সম্রাট করতেন নিজ ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি বাড়ানোর জন্য, নিজের উন্নতির জন্য।
বলা হয়, জগন্নাথের রথের রশি টানলে সেই রাজতুল্য সুখ প্রাপ্তি হয়। যদি কোনও ব্যক্তি অনেক পরিশ্রম করছেন, কিন্তু কিছুতেই জীবনে দাঁড়াতে পারছেন না, তাহলে একবার গিয়ে জগন্নাথের রথের রশি টানুন। রথ অগ্রগতির প্রতীক, এগিয়ে যাওয়ার প্রতীক। রথ টানলে দেখবেন আপনি সুফল পাবেনই।
সারা বছর জগন্নাথদেব নিজ মন্দিরে রত্নবেদীতে প্রতিষ্ঠিত থাকেন। কিন্তু একদিন জগতের নাথ বাইরে আসেন নিজ ভক্তদের মধ্যে। তিনি বাইরে আসেন তাদের প্রার্থনা শোনার জন্য। সব ইচ্ছে পূরণ করার জন্য।
রথের রশি ধরে টানা মানে আসলে এই দিন জগতের নাথের সেবা করা। নিজের মনের বাসনা তাঁর কাছে পৌঁছে দেওয়া। এই ইচ্ছে তিনি অবশ্যই পূরণ করেন। তাই লাখো ভক্ত এই দিন রথের রশিতে টান দিয়ে নিজের আর্জি জানান জগন্নাথকে।
রথযাত্রার মাহাত্ম্য অনেক। আর এই মাহাত্ম্যের টানেই তো অগণিত ভক্ত ছুটে যান রথের দিন পুরীতে। এখানে যুক্তি কাজ করে না। সব কিছু তর্ক দিয়ে চলে না। শুধু বিশ্বাসের জোরে আর জগন্নাথের উপর আস্থা রেখেই এতো মানুষ ছুটে যান রথের দিন পুরীতে শুধু একবার জগন্নাথের রথের রশি টানবেন বলে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…