“পিতৃ” শব্দের অর্থ পূর্বপুরুষ। এরা যেমন আশীর্বাদ দিয়ে আমাদের জীবনে খুশির জোয়ার নিয়ে আসতে পারেন, আবার এনারাই যখন অভিশাপ দেন তখন তার বেড়াজালে আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। কষ্ট ও নানান জটিলতা হয় নিত্যসঙ্গী।এটিকে জ্যোতিষশাস্ত্রে প্রেতবাধা বা পিতৃ দোষ বলা হয়ে থাকে। এই প্রকার দোষ থেকে কিভাবে উদ্ধার পাবেন এবং এই সম্পর্কে আজ আমরা বিশদে জেনে নিন আসুন।
পিতৃ দোষ যেমন আগেই জানালাম যে আমাদের পূর্বপুরুষদের থেকে আমাদের মধ্যে আসে। পূর্বপুরুষদের নশ্বর শরীর জ্বলে গেলেও তাদের আত্মা সূক্ষ্ম দেহ ধারণ করে বিচরণ করে। পিতৃ দোষ আমাদের জন্মকুণ্ডলী বা কোষ্ঠীতে থাকে। এই দোষের প্রভাবে মানুষ কি করণীয় তা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়ে।
জ্যোতিষ মত অনুসারে, চন্দ্র ও সূর্য হলেন আমাদের পিতৃকারক গ্রহ বা পিতাতুল্য।যেহেতু চন্দ্র ও সূর্য থেকেই এই সৌরমণ্ডলে প্রাণের বিকাশ ঘটেছে এবং তাদের উষ্মাতেই জগৎ পরিচালিত হয় সেই জন্য এইরকম ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জন্মছকে যদি এই দুই গ্রহ সংযোগ কোনো দুষ্ট বা খারাপ গ্রহের সাথে তৈরি হয় তবে জাতকের জীবনে সমূহ বিপদ ঘনিয়ে আসে।
পিতৃ দোষ কি এই নিয়ে অনেকেরই ধারণা ছিলো না একথা হলফ করে বলাই যায়। এবার যখন সেটা কি জানা গেছে এবার তার কিরকম ভাবে তৈরি হয় সেটাও দেখে নিন।
কোনো ব্যক্তি নিজের হাতে তার বাবাকে হত্যা করলে, আঘাত করলে বা ভুতপূর্ব গুরুজনদের অপমানজনক কটুকথা শোনালে, পরবর্তী জন্মে সেই ব্যক্তি পিতৃ দোষ এর ফলভোগ করে। কোষ্ঠিতে পিতৃ দোষ নির্দেশ করে যে আগের জন্মে সেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পূর্বপুরুষ কোনো কারণে দুঃখের মধ্যে নিজেদের সময় যাপন করছেন।
মৃত্যুর পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ঠিকঠাক যথোচিত মর্যাদা বা শাস্ত্রীয় নিয়মকানুন মেনে সম্পন্ন না হলে বা গুরুজনের কোনো ইচ্ছে মৃত্যুর আগে অপূর্ণ থেকে গেলে আত্মা অতৃপ্তিতে ভোগে ও ক্রুদ্ধ হয়। এই অবস্থায় পিতৃ দোষ সৃষ্টি হয়ে থাকে।
তারা ইচ্ছে পূরণের জন্য উত্তরসূরিদের চাপ দেয়, স্বপ্ন বা সংকেতের দ্বারা। এর ফলে সেই পরবর্তী পুরুষরা নিদারুণ কষ্ট ও পীড়ার মধ্যে থাকেন। সেটাই জন্মপত্রিকায় প্রতিফলিত হয়ে থাকে।
পিতৃ দোষ থাকলে যেমন ব্যক্তির জীবন কষ্ট ও ক্ষতি দিয়ে পরিপূর্ণ হয় তেমনি তার সঠিক প্রতিফলন কিন্তু জন্মছকেও ধরা পড়ে।
জ্যোতিষশাস্ত্রে সূর্য বা রবিকে পিতা হিসেবে কল্পনা করা হয়ে থাকে এবং মঙ্গল হলো রক্তের কারক গ্রহ। এই দুই গ্রহদ্বয় যখন নিচস্থ বা পাপগ্রস্ত তখন পিতৃ দোষ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
এছাড়াও কিছু গ্রহের বিশেষ অবস্থানগত কারণের ভিত্তিতেও এই দোষ দেখা যায়।
দুঃখপূর্ণ ও অবসাদ গ্রস্ত দাম্পত্য জীবন আপনি বয়ে বেড়াবেন। স্বামী স্ত্রী বা আত্মীয় পরিজনদের সাথে সম্পর্কে সবসময়ই আন্তরিকতার অভাব বোধ করবেন।
পারিবারিক অশান্তি, চাকরিতে বাধা, গর্ভপাত, বন্ধ্যাত্ব ও সঙ্গী বা সঙ্গিনীর অসময়ে মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটতে পারে। সমাজ থেকে বিচ্যুত হবেন। একঘরে হতে পারেন এবং জনজীবনে সম্মানহানির সম্ভাবনা থাকে।
সন্তানসন্ততির পড়াশোনা, শরীর নিয়ে হামেশাই উদ্বেগ লেগে থাকে। তারা কোনো না কোনো অসুখে ভোগে।
পিতৃ দোষ কাটানো বেশ শক্ত ব্যাপার যদিও কিছু টোটকা ও উপায় আছে যেগুলো দিয়ে আপনি সুরাহা পেতে পারেন।
মহালয়ার দিন ভোরে উঠে নদীতে পিতামাতা হীনরা বা যাদের দোষ আছে এবং তাদের পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে, তাদের আত্মার শান্তি স্বস্তয়ন করে(চাইলে ব্রাহ্মণ দিয়েও করতে পারেন) তর্পণ করলে দোষ কাটে।
গঙ্গায় হাতে কুশার্ঘ নিয়ে পৃথিবীর সমস্ত পিতৃপুরুষের শান্তি ও আশীর্বাদ কামনা করে অঞ্জলি দান করলে দোষ অনেকাংশে খণ্ডন হয়।
পিতৃ দোষ থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইলে পাত্রে কালো তিল ও জল নিয়ে অমাবস্যা তিথিতে ভোরে সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে অর্পণ করলে শুধু পিতৃ দোষ নয় শনির সাড়ে সাতির প্রভাব থেকেও ছাড়া মেলে।
শনিবার কাঁচা দুধ ও কিছু তিল একসাথে মেখে অশ্বত্থ গাছের নিচে ভক্তিভরে নিবেদন করুন। ত্রিদেব এতে তুষ্ট হন ও দোষ খণ্ডন করেন।
বছরের একটা বিশেষ সময়ে দশদিনের পিতৃপক্ষ উপলক্ষ্য তিথি থাকে,সেইসময় যদি কোনো পন্ডিত মানুষের পরামর্শে বা গুরুর সান্নিধ্যে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে বিশেষ পুজোর আয়োজন করে প্রিয়জনদের স্মরণ করে জল ও নতুন কাপড় দান করা যায় তবে খুবই শুভ ফল দেয়।
একাদশী ও অমাবস্যায় কঠোরভাবে নিরামিষ আহার গ্রহণ করুন নতুবা পিতৃপুরুষরা খুবই ক্রুদ্ধ হন।
চতুর্দশীর দিন বাড়ির সামনে চোদ্দ প্রদীপ জ্বালান। ওইদিন চোদ্দ শাক ও খাবারে রাখুন। পারলে পিতৃপুরুষের ছবি নিয়ে তার সামনে পরিবারের সকলে দাঁড়িয়ে শ্রাদ্ধ করে পিন্ড দান পূর্বক ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। এটিও কার্যকরী উপায়।
ভগবান শিবের চেয়ে ক্ষমাশীল আর কে আছেন বলুন? তিনি চাইলে যেকোনো দোষ কর্পূরের মতো উবে যায়। আর ভোলানাথকে তুষ্ট করাও সোজা। শিবলিঙ্গের সামনে স্নান করে শুদ্ধচিত্তে বসে ধুপ ও প্রদীপ জ্বালান। এরপর একমনে ভক্তিভরে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করুন। মার্কেন্ডেয় পুরান অনুযায়ী এই মন্ত্রের প্রভাবে শুধু পিতৃ দোষ নয় কালসর্প দোষ, বাস্তুদোষ ইত্যাদি থেকেও রেহাই পাওয়া যায়।
এছাড়াও ঘরোয়া পশুপালন, ইষ্টদেবের অর্চনা ও কুকুরদের ভোজন করালেও উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া গেছে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…