ভারতের বিভিন্ন কোণায় এমন কিছু স্থাপত্যের নিদর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, যা যুগ যুগ ধরে ইতিহাসের গল্প বলে আসছে। বিভিন্ন সময় রাজনীতি, ধর্মীয় রীতি-নীতি, এবং পরিবার সংক্রান্ত নানা বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল এইসব ঐতিহাসিক স্থাপত্য। যা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে।
তেমনই এক ঐতিহাসিক স্থাপত্য হল তাজমহল, যা মুঘল সম্রাট শাহজাহানের প্রেমের প্রতীক হওয়ার পাশাপাশি সারা বিশ্বের কাছে এক ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান হিসাবে পরিচিত। তাজমহল সংক্রান্ত একগুচ্ছ তথ্য দেব আজকের এই প্রতিবেদনে। যা জেনে রাখা উচিত।
ইতিহাস বলে, তাজমহল একটি সমাধিস্থল। যা, মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রীর শেষ ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে তৈরি করেছিলেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ইউনেসকো (UNESCO) তাজমহলকে দিয়েছে এক বিশেষ সম্মান। তাজমহলকে বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে একটি আশ্চর্য হিসাবে তুলে ধরেছে দুনিয়ার সামনে। অসাধারণ শৈল্পিক কারিগরী এবং সৌন্দর্যের প্রতীক এই তাজমহলে প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে প্রায় ১২,০০০ পর্যটক আসেন। এই ইমারত কিন্তু সারা বিশ্বের মধ্যে এক এবং অদ্বিতীয় কারণ বিশ্বের কোনও কোণাতে খুঁজলেও এমন ইমারত খুঁজে পাওয়া যায় না।
ঐতিহাসিক মুঘল সাম্রাজ্যের বাবর, হুমায়ুন, আকবর এবং জাহাঙ্গীরের পর পঞ্চম মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর তৃতীয় স্ত্রী মুমতাজের মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতির উদ্দেশেই এই স্মৃতিশৌধটি নির্মাণ করেছিলেন। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের পুত্র হলেন আ’লা আজাদ আবুল মুজাফর শাহাব উদ-দিন মহম্মদ শাহ জাহান, যিনি পরবর্তীকালে শাহজাহান নামে পরিচিত হন। ১৬১২ খ্রীষ্টাব্দ মুমতাজের সঙ্গে বিবাহ হয়। তৃতীয় স্ত্রী মুমতাজকে খুবই পছন্দ করতেন শাহজাহান। পাশাপাশি বড় বড় বিল্ডিং-ইমারত তৈরিতে বিশেষ শখ এবং জ্ঞান ছিল শাহজাহানের। সবই ঠিক ছিল , কিন্তু শাহজাহানের চৌদ্দতম সন্তানকে জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান মুমতাজ। তখনই স্ত্রীর ইচ্ছাপূরণের জন্য একটি অনন্য সমাধি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন শাহজাহান।
নিজের প্রিয় স্ত্রী মুমজাতের স্মৃতি সর্বদা নিজের কাছে রেখে দিতে চেয়েছিলেন সম্রাট শাহজাহান। অসাধারণ এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করতে শাহজাহান সারা বিশ্বের তাবড় তাবড় কারিগরদের সাহায্য নিয়েছিলেন। তবে মুমতাজের মৃত্যুর পর কিন্তু তাঁকে অন্যত্র সমাহিত করা হয়েছিল। তাজমহল নির্মাণের পর তাঁর পুনরায় মুমতাজের সমাধিস্থল তাজমহলে তৈরি করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বাল্যকালে ঠাকুরদাদা আকবরের খুবই প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছিলেন শাহজাহান। ১৬৭২ সালে পিতা জাহাঙ্গিরের মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে মুঘল সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসেছিলেন আকবর। শাহজাহানকে মোঘল সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তাঁর শাসনকালে ভারতীয় সভ্যতা বিশেষভাবে সমৃদ্ধ হয়েছিল বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা। কিন্তু ১৬৫৮ সালে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে পুত্র ঔরঙ্গজেব তাঁকে বন্দি করেন। এরপর বন্দি অবস্থাতেই মৃত্যু হয়। মৃত্যু আগে শেষ ইচ্ছা হিসাবে তিনি চেয়েছিলেন যে, তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁকে যেমন মুমতাজের পাশেই সমাহিত করা হয়। তাঁর শেষ ইচ্ছাকে সম্মান জানোনো হয়।
বিখ্যাত স্থপতি ওস্তাদ আমির লহরি তাজমহল তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন ১৬৩২ সালে এবং তা শেষ হয়েছিল ১৬৫৩ সালে। ২১ বছর লেগেছিল তাজমহল তৈরি হতে।
তাজমহল তৈরিতে ফরাসি অটোমান, ভারতীয় এবং ইসলামিক স্থাপত্যরীতি একসঙ্গে ধরা পড়েছে তাজমহল নির্মাণের ক্ষেত্রে। চিন, তিব্বত ও শ্রীলঙ্কা থেকে ২৮ রকমের বিশেষ মূল্যবান পাথর অর্ডার দিয়ে আনানো হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, বাগদাদ, বুখারা, সমরকন্দ এবং তুরস্ক থেকে কারিগররা এসে রাজস্থানের মাকরানার খনি থেকে মার্বেল পাথরের ওপর খোদাই করে এই স্থাপত্য নির্মাণ করেছিলেন।
কোথায় অবস্থিত? – আগ্রা, উত্তরপ্রদেশ (ভারত)
কবে নির্মিত? – সাল ১৬৩২-১৬৫৩
কে নির্মাণ করেন? – মুঘল সম্রাট শাহজাহান
নির্মাণ শিল্পী?- ওস্তাদ আমির লহরি
তাজমহল নির্মামের জন্য শাহজাহান আগ্রার যমুনা নদীর তীরের একটি জায়গাকেই বেছে নিয়েছিলেন। সমাধিটি প্রায় ৭৩ মিটার উঁচু এবং প্রায় ১৭ হেক্টর জমির ওপর বিস্তৃত। আর এর আরেকটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এর গম্বুজগুলি, যা ইমারতটিকে একটা ত্রিমাত্রিক (three dimensional) এফেক্ট দেয়। শুধু তাই নয় এটি নির্মাণে যে বিশেষ ধরণের মার্বেল পাথরের ব্যবহার করা হয়েছে, তা দিনের বিভিন্ন সময়ে সূর্যের আলোর সঙ্গে সঙ্গে রঙ পরিবর্তন করে। অসাধারণ এই স্থাপত্য নিজের চোখে দেখতে বছরে প্রায় ৮০ লক্ষ পর্যটকের সমাগম ঘটে।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…