নিত্যদিনের রান্নায় মশলা হিসেবে কিংবা সালাদে পেঁয়াজ কতটা জরুরি তা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু চুলের যত্নেও যে পেঁয়াজ সর্বেসর্বা তা কি জানি? অবাক হবার কিছুই নেই। পেঁয়াজের গুণাগুণ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। চুলের ঝরে পরা, আগা ফেটে যাওয়া, চুল সাদা হয়ে যাওয়া, খুশকি, উঁকুন দূর করাসহ চুলের এমন কোনো সমস্যা নেই যার সমাধান পেঁয়াজে নেই।
আমাদের একেকটা মানুষের চুলের সমস্যা বা এর পিছনের কারন ভিন্ন হলেও সকলেই প্রতিকার পাবেন পেঁয়াজে। চুলকে শাইনি ও সিল্কি করতে চাইলেও পারবেন পেঁয়াজ দিয়েই। তাছাড়া নিয়মিত চুলে পেঁয়াজের ব্যবহার চুলকে করে তোলে ঘন, কোমল ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
মাথার ত্বকে খুশকি ছেলে-বুড়ো সকলেরই কম-বেশি হয়ে থাকে। অনেক সময় খুশকি এত মারাত্মক হয়ে ওঠে যে মাথার চামড়াও উঠে আসে। এই সমস্যা দূর করতে পারে পেঁয়াজের রস। প্রথমেই তিন কি চারটে পেঁয়াজ বেঁটে নিন বা পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার নরম হাতে ঘষে ঘষে পুরো স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ফেলুন। আধ ঘন্টা পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিনবার পেঁয়াজের রস ব্যবহার করলে খুশকি আর থাকবে না মাথায়। খুশকি কমে গেলে সপ্তাহে একবার এই পেস্টটি ব্যবহার করুন।
চুলের আগা ফেটে যাওয়া বা দু’মুখো হয়ে যাওয়া মেয়েদের চুলের একেবারে কমন সমস্যা। চুল একটু লম্বা হতে না হতেই আগা ফেটে যায়। এই ফাটা রোধ করতে পারে পেঁয়াজ। তবে প্রথমেই চুলের বেশি ফেটে যাওয়া অংশ ছেটে নিন। এবার পেঁয়াজ বেটে বা ব্লেন্ডারে পেস্ট করে নিন। পেস্ট ছেঁকে রস আলাদা করে নিন। এবার পেঁয়াজের রসটুকুর সাথে সমপরিমান মধু ভালোভাবে মিশান। চুলের আগায় এই মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন। এক ঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার নিয়মিত ব্যবহারে আগা ফাটা কমে আসবে।
চুল যখন অপুষ্টিতে ভোগে তখনই চুলের ঝরে পরা বেড়ে যায়। ডিম ও পেঁয়াজের হেয়ার মাস্ক চুলে পুষ্টি যোগায় এবং চুলের গোড়া মজবুত করে, সেই সাথে নতুন চুল গজাতে এবং চুলের গ্রোথ বাড়াতে সাহায্য করে। প্রথমেই পাঁচটি পেঁয়াজ পেস্ট করে নিন। একটি ডিমের সাথে পেঁয়াজের পেস্ট ও একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে দশ মিনিট রেখে দিন। এবারে পুরো স্ক্যাল্পসহ চুলের আগা পর্যন্ত এই মাস্কটি লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন। আধ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। ভালো ফল পেতে দশ দিন পরপর একবার করে মাস্কটি ব্যবহার করুন।
উঁকুনের যে কি যন্ত্রণা তা কেবল যার মাথায় হয় সে-ই বোঝে। এই উঁকুন আবার পেঁয়াজের ঝাঁঝ সহ্য করতে পারে না। তাই পেঁয়াজ উঁকুন তাড়াতে খুবই কার্যকরী। প্রথমেই পেঁয়াজের পেস্ট ছেকে রস আলাদা করে নিন। এর সাথে কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করে লাগিয়ে নিন। বিশ মিনিট পর চিকন চিরুনী দিয়ে আচড়ালে দেখবেন সব উঁকুন চলে আসবে।
অকালে সব চুল পেকে যাচ্ছে? চিন্তা নেই, সেই সমাধানও আছে পেঁয়াজে। আমলকি শুকিয়ে গুড়ো করে নিন। এর সাথে পেঁয়াজ বাটা বা পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পেস্ট করে পুরো স্ক্যাল্প থেকে চুলের আগা পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। ত্রিশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুদিন অন্তর এই মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারলে বেশ ভালো ফল পাবেন।
পেঁয়াজের রস চুলকে কন্ডিশনিং করে এবং প্রাকৃতিকভাবে শাইনি করে তোলে। তাছাড়া চুলের বৃদ্ধিও ত্বরান্বিত করে। পেঁয়াজের রসের সাথে সমপরিমান অ্যালোভেরা জেল ও বাদাম তেল মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি স্ক্যাল্পে মালিশ করে এক ঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুইবার এই মিশ্রণটি চুলে ব্যবহার করুন। একমাস পর নিজেই দেখুন চুল কতখানি বড় হলো।
নারকেল তেল তো চুলে নিত্যই মালিশ করেন। এবার থেকে নারকেল তেলের সাথে সামান্য পেঁয়াজের রসও মিশিয়ে নিবেন। এতে নারকেল তেলের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়। নারকেল তেল সামান্য গরম করে এর সাথে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে মালিশ করুন। নিয়মিত ব্যবহারে নিজেই বুঝবেন পেঁয়াজের উপকার।
চেষ্টা করবেন চুলে পেঁয়াজ ব্যবহারের পর মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলার।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…