পাইলস বা অর্শ অত্যন্ত যন্ত্রণা দায়ক একটি রোগ। সময় থাকতে এর চিকিৎসা না হলে অনেক সময় ক্যান্সার হয়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা যেতে পারে। সাধারণত শ্রোণীচক্রের নিচে ও পায়ুপথের বাইরের বা ভেতরের অংশে রক্তনালীতে জ্বালা বা তা ফুলে ওঠাকে অর্শ, পাইলস বা হেমারয়েডস বলা হয়ে থাকে।
পাইলস হলে সাধারণত পায়ুপথে রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে তবে তা জটিল আকার ধারণ করলে পায়ুপথে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়। তাই সময় থাকতেই সচেতন হন। আর আপনাদের এই সচেতনতা বাড়িয়ে তোলার জন্য আজ থাকছে কতগুলি ঘরোয়া টিপস যার দ্বারা আপনি এই রোগ বা ব্যথা এড়াতে পারেন।
সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া এই রোগের একটি মূল কারণ। এছাড়া শরীরের ওজন বৃদ্ধি, শাকসব্জি ও জল কম খাওয়া, লিভার সিরোসিস, অতিরিক্ত মাত্রায় লেকজেটিভের ব্যবহার অনেক সময় এই রোগের কারণ হয়ে দাড়ায়। তবে পারিবারিক সূত্রেও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে। সাধারনত বৃদ্ধ বয়সে এই রোগের সম্ভাবনা প্রবল হয়ে দাড়ায়।
বরফ এই রোগে ব্যথার উপশমে অত্যন্ত আরাম দায়ক একটি উপাদান। বরফের ব্যবহার রক্তপাত বন্ধ করে, ফুলে যাওয়াকে কম করে এবং খুব তাড়াতাড়ি আরাম দেয়।
আইস প্যাক বা বরফের কয়েকটি টুকরো একটি কাপড়ে জড়িয়ে আপনার ফুলে যাওয়া অংশটিতে ১০ মিনিট ধরে থাকুন। এই পদ্ধতিতে আপনি দিনে বেশ কয়েক বার বরফের সেক দিলে খুব তাড়াতাড়ি আরাম পেয়ে যাবেন।
অ্যালোভেরা অর্শ বা পাইলসের ব্যথা উপশমকারী সবথেকে কার্যকরী উপাদান। এর অ্যান্টিইন্ফ্লামেটেরি ও থেরাপেউটিক উপাদান গুলি খুব তাড়াতাড়ি যন্ত্রণা বা ইরিটেশন বা চুলকানির উপশম করে। এই উপাদান ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল পাইলসের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
এক্সটারনাল বা মলদ্বারের বাইরে যদি পাইলস হয়ে থাকে তাহলে অ্যালোভেরা জেল মলদ্বারের বাইরের ব্যথা বা যন্ত্রণা হওয়া অংশে হালকা ভবে ম্যাসাজ করুন। এতে আপনার যন্ত্রণা বা জ্বালাপোড়া কম হয়ে যাবে। ইন্টারনাল বা মলদ্বারের ভেতরে পাইলস হলে অ্যালোভেরাকে পাতলা লম্বা অংশে কেটে একটি কন্টেনারে রেখে ফ্রিজে রেখে দিন কিছুক্ষণ। ঠান্ডা অ্যালোভেরা আপনার যন্ত্রণার অংশে প্রয়োগ করুন। এতে আপনার যন্ত্রণার উপশম হবে।
আলমন্ড অয়েল অর্শ বা পাইলসের যন্ত্রণা বা জ্বালা উপশমে অত্যন্ত উপকারী। এই তেল সাধারণত মলদ্বারের বাইরে পাইলসের ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
কটন বল বা তুলো আলমন্ড অয়েলে ভিজিয়ে মলদ্বারে ধীরে ধীরে লাগান। এতে পাইলসের ফলে মলদ্বার ফুলে উঠলে তা কমে যায় এবং ব্যথা ও চুলকানির জ্বালা কমে যায়। দিনে ৩-৪ বার এই পদ্ধতিতে আলমন্ড অয়েল প্রয়োগ করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে।
ক্যাস্টর অয়েল অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাংগাল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটেরি উপাদান পাইলস উপশমে এবং এর থেকে হওয়া ব্যথা ও জ্বালা উপশম করতে সাহায্য করে।
দুধ ও ক্যাস্টর অয়েল আপনার মলদ্বারে প্রয়োগ করলে আপনি আরাম পেতে পারেন।
ইপ্সম লবনের ব্যবহার অর্শ বা পাইলসের ব্যাথার উপশমে কার্যকরী।
২ চামচ ইপ্সম লবন ও ২ চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে একটি সাদা পরিষ্কার গজ প্যাডে লাগিয়ে আপনার ব্যথা ও যন্ত্রণার অংশে ১০ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। প্রতি ৪ বা ৬ ঘন্টা অন্তর প্রয়োগ করুন। এতে আপনি জ্বালা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।
চা পাতায় বর্তমান টান্নিক অ্যাসিড পাইলসের ফলে মলদ্বার ফুলে উঠলে বা যন্ত্রণা হলে তা কমাতে সাহায্য করে।
গরম জলে টি ব্যাগ ভিজিয়ে নিন। একটু ঠান্ডা হলে উষ্ণটি ব্যাগ আপনার ব্যথা অংশে প্রয়োগ করুন ১০ মিনিট। দিনে ২ থেকে ৩ বার এর প্রয়োগ আপনার ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়া আপনার ডায়েটের বিশেষ খেয়াল রাখুন। প্রচুর পরিমান জল খান। রাতে শোবার আগে পরিমিত খাবার খান। সবুজ ও আঁশযুক্ত শাকসব্জি খান। এতে আপনার পাইলস বা অর্শ হবার সম্ভাবনা কম করে।
আলোচ্য সব গুলি উপাদান আপনার ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। তবে অর্শ বা পাইলস হলে কখনই অবহেলা করা উচিত নয় কারণ অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি আপনার কষ্টকে আরো বাড়িয়ে তোলে। তাই এই ঘরোয়া উপকরণ গুলির সাথে সাথে অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
আপনার মুখের রোমকূপ বা পোরসগুলি কি খুবই বড় বড়? আপনি টেকনিক্যালি এইসমস্ত পোর্স ছোট করতে…
পরিষ্কার নিটোল মুখ, অথচ থুঁতনিতে কালো কালো ব্ল্যাকহেডস! কেমন লাগে বলুন তো! সৌন্দর্যটাই নষ্ট হয়ে…
আগেকার দিনে বলা হত, লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ। না, আজকের দিনে আমরা ওইসব কথা বলব…
বাড়ির দেয়ালে রকমারী রঙের ছ্বটা অনেকেরই সাধ ও শখের পরিচয় বহন করে। কিন্তু কিছু বছর…
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত এই কথাটা আমরা সবাই জানি কম বেশি। কিন্তু কেন? কি উপকার…
প্রাচীনকালে যখন রূপচর্চার এত উপকরণ হাতের কাছে ছিল না, সেই সময় থেকেই রূপচর্চার অন্যতম উপকরণ…